বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল: এসঅ্যান্ডপি

আর্থিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও জোরালো প্রবৃদ্ধি ও বিপুল উন্নয়ন চাহিদার কল্যাণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের মতোই ‘স্থিতিশীল’ থাকবে বলে আভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস (এসঅ্যান্ডপি)।
বাংলাদেশের ঋণমান দীর্ঘ মেয়াদে ‘বিবি-’ ও স্বল্প মেয়াদে ‘বি’ বহাল রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা সংস্থাটি, যা বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। ঋণমানেরর প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জোরালো প্রবৃদ্ধির ধারা গড় আয় বাড়াতে থাকবে এবং বছরজুড়ে বাহ্যিক ঝুঁকি মোকাবেলা করে টিকে থাকবে বলে যে প্রত্যাশা ছিল র্যাটিংয়ে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। ২০১০ সালে
এসঅ্যান্ডপির কাছ থেকে প্রথমবারের মতো ঋণমান পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ একই রেটিং পেয়ে আসছে। অর্থনীতির মূল্যায়নের সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের অর্থনীতি, বাজেট ঘাটতি ও বিপুল উন্নয়ন চাহিদার সম্মুখীন হলেও কম বিদেশি ঋণ ও জোরালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে সুবিধা পাচ্ছে।
প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেশের প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাকে চিহ্নিত করার বিপরীতে ভাল বাহ্যিক পরিস্থিতি, উল্লেখযোগ্য দাতাসম্পৃক্ততা থেকে প্রতিফলিত সহায়তা, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও বিশ্বমানের তৈরি পোশাক শিল্পকে তুলে ধরে এসঅ্যান্ডপি। এসঅ্যান্ডপি বলছে, ভবিষ্যত রাজস্ব পরিস্থিতি জোরদারের জন্য সরকার রাজস্ব উদ্যোগগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে র্যাটিং আরও উন্নত হতে পারত।
রাজনীতির ক্ষেত্রে এ ঋণমান সংস্থার মূল্যায়ন হলো, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক চিত্র প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতার পথে বাধা সৃষ্টি করছে এবং সুষ্ঠু নির্ধারণের পথ বন্ধ করছে।
দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, অবকাঠামো ঘাটতি ও ব্যবসায় পরিবেশে জটিলতার কারণে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে নিম্ন পর্যায়ে আছে বলে সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ।
ভাল ঋণমানের জন্য বর্তমানের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৯০০ ডলারকে অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করে এসঅ্যান্ডপি বলছে, এই মাত্রার আয় দুর্বল ও সংকীর্ণ রাজস্ব ভিত্তি তৈরি করে, যার ফলে বাহ্যিক ধাক্কা মোকাবেলায় রাজস্ব ও মুদ্রা পরিস্থিতির স্থিতিস্থাপকতায় সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়।
নিম্ন আয় ও অনেক কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতার পরও ২০১৩-২০২২ মেয়াদের বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রকৃত মাথাপিছু জিডিপি প্রবৃদ্ধি জোরালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
এসঅ্যান্ডপি ব্যাংক খাতের ঋণ ঝুঁকি মূল্যায়নে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে নবম গ্রুপে রেখেছে, প্রথম সর্বোচ্চ ও দশম সর্বনিম্ন।
ব্যক্তি খাতের ব্যাংকগুলো ভাল অবস্থানে থাকলেও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে উল্লেখযোগ্য রয়েছে বলে এসঅ্যান্ডপির মূল্যায়ন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031