আমার রাজনৈতিক জীবনের শেষপ্রান্তে এসে নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ–মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী

শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এই সিদ্ধান্ত আসার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নিজের এই অবস্থান জানান তিনি।

 

রেজাউল করিম চৌধুরী  “আমার রাজনৈতিক জীবনের শেষপ্রান্তে এসে নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। চট্টগ্রামবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।”

একটি বড় সময় চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র প্রয়াত মহিউদ্দন চৌধুরীর নেতৃত্বে সংগঠন করেছেন বলে জানান বর্তমানে নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী।

“মেয়র পদে নির্বাচিত হলে আমি আমার সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করব। চট্টগ্রামবাসীর জন্য জীবন উৎসর্গ করব,” বলেন তিনি।

নগরীর পূর্ব ষোলশহরের বহদ্দার বাড়ির সন্তান রেজাউল নগর ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ১৯৬৯-৭০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন, পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন তিনি।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্মুখ সমরের যোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হন।

এরপর চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর চরম দুঃসময়ে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন তিনি।

এরপর হন যুবলীগের সদস্য। ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হন রেজাউল করিম চৌধুরী। চাক্তাই খাল খনন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব ও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল করিম চৌধুরী।

ছাত্রলীগ যুবলীগ ও নাগরিক আন্দোলনের এই নেতা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। এরপর হন সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমান কমিটিতে তিনি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদকের পদে আছেন।

নিজের এলাকায় বাবা ও মায়ের নামে একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং একটি টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করেছেন রেজাউল করিম।

১৯৫৩ সালে জন্ম নেওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি নেন তিনি।

ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছেন রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯৬৮ সালে নগরীর প্যারেড ময়দানে বঙ্গবন্ধুর জনসভার দিন তাকে মঞ্চে নিয়ে যান তখনকার চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের এই নেতা।

লেখক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে রেজাউল করিম চৌধুরীর। ‘ছাত্রলীগ ষাটের দশক চট্টগ্রাম’ এবং ‘স্বদেশের রাজনীতি ও ঘরের শত্রু বিভীষণ’ নামে দুটি বই রয়েছে তার।

রেজাউল করিম চৌধুরীর তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আরেক মেয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেছেন, ছেলে প্রকৌশলের ছাত্র।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার একটাই চাওয়া, নেত্রীর ভাবমূর্তি এবং দলের সম্মান যেন উজ্জ্বল হয়। নেত্রী যে আস্থা রেখেছেন তা যেন রাখতে পারি। তার সম্মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়।”

তিনি বলেন, “মহিউদ্দিন চৌধুরী আমাদের চট্টগ্রামের দাবি আদায় শিখিয়েছেন। চট্টগ্রাম শহরকে কীভাবে সাজাতে হয় তা উনি দেখিয়েছেন। উনার সময় চট্টগ্রাম সারা দেশে মডেল শহর ছিল, আমি উনার পথে হাঁটব। চট্টগ্রামকে আবার সেই মডেল সিটি হিসেবে গড়তে চাই।”

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031