॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
রোববার (২৮ জুলাই) সকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত ৩৪ জনের পরিবার গণভবনে আসেন। প্রধানমন্ত্রী ৩৪ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং নগদ অর্থ তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী নিহত ব্যক্তিদের পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজ-খবর নেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অশ্রু সজল হতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী তাদের সান্ত¡না দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এসময় অশ্রুসজল প্রধানমন্ত্রী তাদের সান্ত¡না দিয়ে বলেন, আমি আপনাদের বেদনা বুঝি। ‘আমাকে দেখেন, অনেক কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি’। আমাকে প্রতিনিয়ত বাপ-মা-ভাই হারানোর বেদনা নিয়ে চলতে হয়। বাপ-মায়ের লাশটাও দেখতে পারিনি, দেশে ফিরতে পারিনি। ৬ বছর পর দেশে এসেছি। তারপর যখন এসেছি সারা দেশ ঘুরেছি। কারণ আমার বাবা বলত, দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে হবে। আমি সেই কাজটাই করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের মতোই একজন। বাবা-মা ভাই হারানো। কাজের আপনাদের কষ্ট আমি বুঝি। এটা আমার দুর্ভাগ্য যে আমাকে আপনাদের অশ্রু দেখতে হচ্ছে।’ আর আমি আপনাদের পাশে আছি। আমার চেষ্টা থাকবে এই খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা।এ সময় গণভবনে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এ সময় গণভবনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিআরইউ) দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ মারা যান।
এর আগে গত ২৬ জুলাই নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয় বিআরইউআর প্রশাসন। রংপুরের পীরগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল তার বাবা-মায়ের কাছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।