
॥ কক্সবাজার সংবাদদাতা ॥ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা যুদ্ধে গোলাবারুদের শব্দে আতঙ্ক কাটছেনা সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের। সে দেশ থেকে ছোড়া গোলার ভয়ে নিঘুম রাত কাটছে সীমান্তবর্তীদের। তার মধ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা, চোরাচালান, মাদক পাচার, মাইন্ড বিস্ফোরণ ও জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে। এদিকে সীমান্তের নিরাপত্তায় বিজিবি’র পাশাপাশি কোস্ট গার্ডও কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক জিয়াউল হক।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মি’র মধ্যে যুদ্ধে চলছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। এতে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা কক্সবাজারের টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও নাফনদী এবং বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ি’র তুমব্রু সীমান্ত। সেদেশের ছোড়া গোলাবারুদে এদেশে হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি রয়েছে মাইন্ড বিস্ফোরণ, জলসীমা থেকে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়া, অবৈধভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার সহ নানা ঘটনা। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা এই উত্তেজনায় বরাবরই আতংকিত সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন। তারা কামনা করছেন নিরাপত্তা।
নাফ নদী পাড়ের বাসিদা লিয়াকত হোসেন জানান, ‘মিয়ানমারের অস্থির পরিস্থিতিতে আমরা খুব ভয়ের মধ্যে আছি। গত দুই দিন আগেও বাড়ির আঙ্গিনায় মিয়ানমারের ওপার থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়েছে। মাঝে-মধ্যে গোলাবারুদের শব্দে ঘর পর্যন্ত কেপে উঠে।’
টেকনাফের সাবরাংএর বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আজ অনেক দিন পর্যন্ত মিয়ানমারের কারণে আমরা নাফ নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারিনা। তারা যখন-তখন জেলেদের তুলে নিয়ে যায়। অত্যাচার করে। অনেক সময় ফেরৎ দেয়না। আবার অনেকের লাশ পাওয়া যায় নাফ নদীতে’।
আরেক সীমান্তের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরিন যুদ্ধের কারণে বরাবরই আতংকে রয়েছে সীমান্তের লোকজন। ওই পারের ছোড়া গুলিতে হতাহত ছাড়াও চোরাচালান, মাদক পাচার, মাইন্ড বিস্ফোরণ ও জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়া সহ নানা ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এই অবস্থায় প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা নিরাপদ জীবন-যাপন।’
নাফনদী সহ সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা জোরদারে বিজিবি’র পাশাপাশি কঠোর অবস্থানে রয়েছে কোস্ট গার্ড। সীমান্তের নিরপত্তায় মাদক, চেরাচালান, সাময়িকভাবে রোড পরিবর্তণ, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো সহ নানা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কোস্টগার্ডে লোকবল বাড়ানোর কথা বলেন এই বাহিনীর মহাপরিচালক জিয়াউল হক।
কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক জিয়াউল হক বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো নিয়মিত অংশ কোস্ট র্গাডে’র। এই সময়ে মিয়ারমারে সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ চলায় সীমান্তের যেসব অংশ ঝুঁকিপূর্ণ ওসব অংশ থেকে দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাময়িকভাবে রোড পরিবর্তন করতে হবে।
আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের তথ্য মতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারকে পরাজিত করে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর। যেখানে রোহিঙ্গাদের অবস্থান স্থল। তবে এদেশ থেকে নিশ্চিত করে বলা যায়না কখন কি ঘটছে। প্রশাসনের কাছে সীমান্তবর্তী এরাকার লোকজনের প্রত্যাশা নিরাপদ সুন্দর পরিবেশ।