সুপারশপসহ খাদ্যপণ্যের দোকানে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ

আসন্ন রমজানে সেহরি ও ইফতারে নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করতে বিএসটিআইয়ের নজরদারি কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
পাশাপাশি তিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মান পরীক্ষাসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য জরুরি সেবা চালু রাখার নির্দেশ দেন।
আসন্ন রোজার মাস উপলক্ষে ভোক্তা সাধারণের জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য পণ্য নিশ্চিতকরণ, শিল্পখাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়ন এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ বিষয়ক সভায় শিল্পমন্ত্রী বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দেন।
শিল্পসচিব আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি), বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসসি) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, “রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন সুপারশপ এবং চালু থাকা খাদ্যপণ্যের দোকানগুলোতে সার্ভিলেন্স বাড়িয়ে নিরাপদ খাদ্য পণ্যের যোগান নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের উৎপাদক, ক্রেতা-ভোক্তা সাধারণসহ সবাইকে মানসম্পন্ন খাদ্য পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের বিষয়ে বিএসটিআই সম্প্রতি যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, তার আওতা বাড়াতে হবে।”
খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গুণগতমানের পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনের জন্য বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো অব্যাহত রাখার পাশাপাশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার এবং মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে সবাইকে সচেতন করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। একই সাথে রমজান উপলক্ষে ইফতার ও সেহরিতে অধিকাহারে ব্যবহৃত যেসব পণ্যের নমুনা ইতিমধ্যে বাজার থেকে সংগ্রহ করে বিএসটিআইয়ের ল্যাবরেটরিতে টেস্টিং চলছে, সেগুলোর ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করে গণমাধ্যমের সহায়তায় ভোক্তা সাধারণকে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
মন্ত্রী হুমায়ূন বলেন, “রমজান উপলক্ষে ভোক্তা সাধারণের সুবিধার্থে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে অবস্থিত সুপারশপগুলোতে আখ থেকে উৎপাদিত দেশীয় গুণগতমানের চিনি সহজপ্রাপ্য করতে হবে। একই সাথে এসব সুপারশপে মসুর ডাল, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সোনার দানা জৈব সার বিপণন করতে হবে।“
শিল্পমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের প্রতি ইঞ্চি আবাদি জমিতে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এর বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিসিআইসির আওতাধীন প্রতিটি সার কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন চালু রাখতে হবে।
করোনাভাইরাসের ফলে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এসব উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় ও বাজারজাতকরণে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হবে।
এসএমই শিল্পোদ্যোক্তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ ই-কমার্স এর মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রিতে সহযোগিতা বাড়াতে এসএমই ফাউন্ডেশনকে নির্দেশনা দেন তিনি।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং কুটির শিল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ যাতে শুধু ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা পান সেটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
“এ বিষয়ে কোন প্রকার দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
শিল্প প্রতিমন্ত্রী এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চিনিকলগুলোর শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনকে নির্দেশনা তিনি।
সভায় জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের আওতাধীন ১৫টি চিনিকলে ৬৫ হাজার টনেরও বেশি চিনি মজুদ রয়েছে। এছাড়া বিসিআইসির আওতাধীন সার কারখানা ও গোডাউনসমূহে বর্তমানে মোট ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৩ টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। গত বছর একই সময়ে ইউরিয়া সারের মোট মজুদের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৬৯ টন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ইউরিয়া সারের মোট চাহিদা ২৫ লাখ ৫০ হাজার টন। ইতিমধ্যে প্রায় ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৭১১ টন সার কৃষকদের সরবরাহ করা হয়েছে।
দেশে এখন লবণেরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। করোনাভাইরাস প্রকোপের মাঝেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে লবণ মাঠ এবং লবণ মিলগুলোতে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। চলতি লবণ মৌসুমের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার লবণ চাষী ১২ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন করেছে, যা গত মৌসুমের এই সময়ের চেয়ে ৭০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।
এ বছর লবণের মোট চাহিদা ১৮ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় চাহিদা মিটিয়ে লবণ মাঠে উৎপাদন, লবণ মিলের লবণসহ সব উৎস মিলে বর্তমানে দেশে ১১ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে। এছাড়াও দেশের সব জেলার ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণ মজুদ রয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে মজুদ লবণ দিয়ে আগামী ১০ মাস পর্যন্ত অনায়াসে দেশের লবণের চাহিদা পূরণ করা যাবে।

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যানের সাথে মতবিনিময় সভা পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে ——ইউজিসি চেয়ারম্যান

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728