‘একুশ’কে উদ্ধারের পর চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায় আকবরশাহ থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ।
নিজস্ব প্রতিবেদক :: অবশেষে ডাস্টবিনে কুড়িয়ে পাওয়া শিশু একুশ যাবে ডাক্তার দম্পতির ঘরে। আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের উদ্ধার করা শিশু ‘একুশ’কে ডাক্তার দম্পতির জিম্মায় দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৯ মার্চ) চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু বিষয়ক বিশেষ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চার দফা শর্ত সাপেক্ষে একুশকে জিম্মার এই আদেশ দেন।
বিচারক আদেশ দেয়ার পর এজলাস কক্ষেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বিয়ের ১৯ বছর পরও নি:সন্তান থাকা শাকিলা। এসময় তার স্বামী ডা.মো.জাকিরুল ইসলামও আবেগাপ্লুত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অতিরিক্ত মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ ফয়েজ জানান, শর্তের মধ্যে আছে, জিম্মায় পাওয়া আবেদনকারীকে শিশুটির নামে ১০ লাখ টাকার শিক্ষাবীমা করতে করে প্রমাণপত্র ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। তাকে ১৫ দিন পর পর আদালতে এসে শিশুটির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানাতে হবে। চিকিৎসার কোনরকম ত্রুটি হলে জিম্মা যে কোনসময় আদালত বাতিল করতে পারবেন।
এছাড়া শিশুটির প্রকৃত মা-বাবা পাওয়া গেলে প্রমাণসাপেক্ষে তাদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য থাকবেন বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন।
আদেশ দেয়ার সময় শিক্ষাবীমার বিষয়ে আদালতের কাছে জানতে চান জেষ্ঠ্য আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। জবাবে আদালত বলেন, শিক্ষাবীমা অবশ্যই শিশুর নামে হবে। অন্য কেউ এই বীমার উপর কোন ধরনের দাবি রাখতে পারবে না।
শিশু একুশকে জিম্মায় পেতে মোট ১৬ জন আবেদন করেছিলেন। চারজন অনুপস্থিত থাকায় ১২ জনের শুনানি গ্রহণ করেন আদালত। আদেশ দেয়ার সময় ৯ জন আবেদনকারী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে ৮ জনই নি:সন্তান।
আবেদনকারী ১২ জনের মধ্যে ১১ জন নি:সন্তান উল্লেখ করে আদালত আদেশ দেয়ার সময় বলেন, এর মাঝেও আমাকে একজন নি:সন্তান খুঁজে পেতে হয়েছে। সবার মাঝে একজনকে খুঁজতে গিয়ে আমি নিজেও ব্যথিত হয়েছি। আমার কাছে যদি অনেক শিশু থাকত তাহলে আমি সবার জিম্মায় একটি করে সন্তান দিতাম।
আদেশ দেয়ার সময় বিচারক বলেন, আমি কোন মহামানব নয়। হয়ত এই আদেশে আমি আপনাদের সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারব না। তবে আল্লাহকে যেন সন্তুষ্ট করতে পারি। মানুষের বিচার করবে আল্লাহ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাত ১২টার দিকে নগরীর কর্ণেলহাট এলাকার লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন ড্রেন থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে আকবরশাহ থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন।