বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা

॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের বুথিডং টাউনশিপে ও আশপাশের কয়েকটি শহর থেকে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান করছে। যা সীমান্ত পিলার ২০, ২১, ২২, ৪৭, ৪৮, ৪৯ ও ৫২ নম্বরের বিপরীতে মিয়ানমার ভিতরে আমতলী, ছেংছড়ি, টাইক্কম ও রাইবুনিয়াসহ অন্তত ১০টি এলাকায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের লোক অবস্থা করছে বলে সূত্র নিশ্চিত করে। যারা গত ১৫ দিন ধরে তারা মন্ডু ও বুথিডং টাউনশিপসহ রোহিঙ্গারা এক কাপড়ে জীবনবাজি রেখে নিরাপদ স্থানের খোঁজে মংডুর উদ্দেশ্যে চলে আসছে বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা যায়। যেকোন সময় নাফ নদী ও স্থল পথে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সম্ভবনা রয়েছেন।
এদিকে অপর একাধিক সূত্র জানায়, সীমান্তের ওপারে ব্যাপক সংঘর্ষে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের গ্রাম। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় বান্দরবান সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার করেছে বলেও জানা গেছে।
সূত্র আরো জানায়, সীমান্ত দিয়ে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় বান্দরবান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবি। বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তের প্রায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গায় সীমান্ত চৌকি ও স্থাপনাগুলোতে বিজিবির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এছাড়া বাড়ানো হয়েছে সীমান্ত এলাকায় টহল ও নজরদারি। সীমান্ত এলাকায় বসানো সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি সীমান্ত থেকে শুরু করে তুমব্রু ঘুমধুম হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পর্যন্ত এসব এলাকায় বিজিবির পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র মতে, সীমান্ত পিলার ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ নম্বরের মধ্যবর্তী মিয়ানমারের ভিতরে আমতলী, ছেংছড়ি, টাইক্কম ও রাইবুনিয়া এলাকায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা এবং উপজাতি সম্প্রদায় লোক অবস্থা করছে। এছাড়া রাখাইন রাজ্যে বুথিডং টাউনশিপে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং মিয়ানমার সামরিক বাহিনী কাউন্সিলের মধ্যে সংঘর্ষ চলার কারণে বিভিন্ন জাতি জিরো পয়েন্টে কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। যার ফলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে তারা যেকোন সময় বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করতে পারে।
অপর আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত গত কয়েকদিনে ব্যাপক রূপ নেয়ায় সীমান্তে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য। এমন খবর আসার পর বর্ডার গার্ড বিজিবি নড়েচড়ে বসেছে। সীমান্তের ওপারে রাখাইনের মংডু ও বুচিডংসহ কয়েকটি উপশহরে গত কয়েকদিন থেকে সে দেশের সেনাবাহিনীর সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকটি গ্রাম।
আরো জানা গেছে, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে বিতাড়িত করছে আরাকান আর্মি। অন্যদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ব্যাপক বোমা হামলায় আতঙ্কে রোহিঙ্গারা নিরাপদ জায়গায় সরে গেছে। কয়েক হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তে নজরদারি ও নিরাপত্তা আগের চেয়ে দ্বিগুণ জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের বুথিডং টাউনশিপে শত শত বছর পূর্ব থেকে বসবাস করে আসছেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ইতিহাস স্বাক্ষী বহন করে। মিয়ানমার সরকার ও বিদ্রোহী গ্রুপ এএ এর মাঝে দীর্ঘদিন যাবত চলমান যুদ্ধে একদিকে সরকার রোহিঙ্গাদেরকে এবং অন্যদিকে বিদ্রোহী গ্রুপ এএ ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে সরকার ও এএ সুপরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে আসছেন সূত্রে জানা যায়। বিদ্রোহী গ্রুপ এএ বুথিডং টাউনশিপ দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে সেনাদের সাথে চলমান যুদ্ধে গত ১৮ মে ২০২৪ তারিখ বিদ্রোহী গ্রুপ এএ বুথিডং টাউনশিপে সম্পূর্ণ দখলে নিয়ে সেনাদেরকে বিতাড়িত করেছেন জানা যায়। বিদ্রোহী গ্রুপ এএ নিজ ইউনিট থেকে পালিয়ে যাওয়া সেনা সদস্যদেরকে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে ও সূত্রে জানা যায়। বিদ্রোহী গ্রুপ এএ পূর্ব পরিকল্পিত ধর্মীয় চেতনায় যুদ্ধের বাহনাকে কাজে লাগিয়ে বুথিডং এলাকায় বসবাসরত সমস্ত রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে ঘরবাড়ি ছাড়া করে দেশ ত্যাগের বাধ্য করছে বলে জানা যায় ।
রোহিঙ্গারা এএ এর বর্বরতা জুলুম নির্যাতন ধর্ষণ খুন লুটপাট ইত্যাদি সহ্য করতে না পেরে জীবন বাজী রেখে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে খোলা মাঠে স্কুলে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে সূত্রে জানা যায়। বিদ্রোহী গ্রুপ এএ বুথিডং এলাকায় প্রায় ০৮ হাজারের অধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে জানা যায়। হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কি হবে এবং রোহিঙ্গারা কোথায় আশ্রয় নিবেন ?
গোপন সূত্রে জানা যায়, বুথিডং ও মংডুতে বসবাসরত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের স্থানীয় দালাল ও বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টায় রয়েছেন। বিদ্রোহী গ্রুপ এএ খুব শীঘ্রই মংডু জেলা শহর দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে যুদ্ধ শুরু করার প্রদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলার বুথিডং টাউনশিপের (১) ইন চাউং (২) তাত মিন চাউং (৩) নাগ কিজিন তাউক (৪) মি কজাউং (৫) কেজুউক এইচপিউ তাং (৬) লাউং চাউং রোহিঙ্গা পাড়ায় বিদ্রোহী গ্রুপ এএ সশস্ত্র দুই শতাধিক সদস্য গত ১৭ মে ২০২৪ তারিখ রাত ১০টার দিকে অর্তকৃত হামলা দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে ঘর হতে অস্ত্রের মুখে জোর পূর্বক বাহির করে টাকা স্বর্ণ ও মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে ০৬টি পাড়া জ্বালিয়ে দিয়েছেন সূত্রে জানা যায়।
কিছু রোহিঙ্গা ঘরছেড়ে যেতে না চাইলে এলোপাতাড়ি গুলি করলে অনেক রোহিঙ্গা নিহত ও আহত হয়েছে বলে জানা যায়। তবে আহত নিহতের সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গারা কিছু দিন পূর্বে বিদ্রোহী গ্রুপ এএ এর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষে হরতাল করা ও সেনাবাহিনীতে রোহিঙ্গারা যোগদানের কারণে প্রতিশোধ মূলক এএ রোহিঙ্গাদের পাড়া গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে দেশ ত্যাগের বাধ্য করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
গত ২০১৭ ও ১৯৯১ সালের ন্যায় রোহিঙ্গারা পুনরায় বাংলাদেশে চলে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। বুথিডং থেকে রোহিঙ্গারা মংডু ও রাথিডং এর দিকে চলে আসার সময় বিদ্রোহী গ্রুপ এএ এর সশস্ত্র সদস্যরা গুলি করে হত্যাসহ লুটপাট ও নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বলে জানা যায়।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031