রাঙ্গামাটির পরিস্থিতি অশান্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র !

॥ বিশেষ সংবাদদাতা ॥ রাঙ্গামাটির পরিস্থিতিকে অশান্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু চলছে। বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটিতে সচেতন মহলের ব্যানারে মহা সমাবেশ ডাক দেয়া তা বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল এ অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনের ঘটনায় এই ধনের ইঙ্গিত বহন করছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতৃস্থানীয় অনেকেই বলছেন রাঙ্গামাটি শহরে ইতিমধ্যে দুটি ষড়যন্ত্র নসাৎ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। তার পরেও ষড়যন্ত্রকারীরা নানা অপকৌশলীলে রাঙ্গামাটি শান্ত পরিস্থিতি অশান্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তাদের মতে গত কয়েকদিন ধরে রাঙ্গামাটিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবীতে আহুত মহা সমাবেশকে সফল করতে রাঙ্গামাটির সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে প্রচার প্রচারণায় শরু হওয়ায় মানুষের মাঝে অবৈধ অস্ত্রধারী ও চাঁদাবাজে মদদ দেয়া মহলটি নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ২৮ জানুয়ারীর সমাবেশ বানচাল করতে তারই আগে মহলটি রাঙ্গামাটির পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে নেয়ার নানা অপকৌশলে লিপ্ত রয়েছে। এর অংশ হিসাবে গত কয়েক দিনে রাঙ্গামাটি শহরে বিক্ষিপ্ত ঘটনার চেষ্টা করা হলেও প্রশাসনের ও সাধারণ মানুষের প্রতিরোধের মুখে তা ব্যর্থ হয়ে যায়।
গত ২৫ জানুয়ারী রাতে রাঙ্গামাটি রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে প্রধান সড়কে খোকন নামে একজন অটোরিক্সা চালককে ১৫/২০ জনের একদল পাহাড়ী যুবক ইচ্ছাকৃত ভাবে হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়রা এগেিয় আসলে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সংঘর্ষে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে সরকার দলীয় কয়েকজন যুব নেতার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং পাহাড়ী বাঙ্গালী সংঘর্ষে রূপ নিতে পারেনি। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা আসলে পাহাড়ী যুবকরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
এদিকে রাঙ্গামাটি হাসপাতালের দায়িত্বশীল একটি সুত্র জানায়, গতকাল রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে বিলাইছড়িতে নির্যাতিত ২ কিশোরীকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। গতকাল সকাল থেকে দ্বিতীয় চাকমা রানী য়েন য়েন কয়েক দফা রাঙ্গামাটি হাসপাতালে ভিকটিমদের সাথে কথা বলেন এবং প্রশাসনের লোকজনের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন। বিকাল সাড়ে ৪ টার পরে রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, দ্বিতীয় চাকমা রানী য়েন য়েন, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বঞ্চিতা চাকমা সহ বেশ কয়েকজন উপজাতীয় আইনজীবি নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়ে হাসপাতালে অবস্থান করেন। এ সময় প্রায় ২ শতাধিক পাহাড়ী যুবক রাঙ্গামাটি হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করছিলো। যে কোন পরিস্থিতির অবনতির আশংকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয় এবং সাধারণ মানুষের চলাচলে করাকরি আরোপ করে। ফলে হাসপাতালে অনাকাঙ্খিত কোন পরিস্থিতির ঘটনানোর সুযোগ হয়নি।
এর পর রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সফিউল সারোয়ার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নিহার রঞ্জন নন্দী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনী আক্তার, রাঙ্গামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সত্যাজিত বড়–য়া সহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাগণ হাসপাতালে গিয়ে রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, দ্বিতীয় চাকমা রানী য়েন য়েন, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বঞ্চিতা চাকমা সহ বেশ কয়েকজন উপজাতীয় আইনজীবির সঙ্গে কথা বলেন এবং আলাপ আলোচনার পর উভয় পক্ষ হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
এদিকে ২ ডিসেম্বরের পর থেকে রাঙ্গামাটিতে ঘটে যাওয়া খুন, হামলা, অপহরণ সহ চলমান নানা ঘটনায় রাঙ্গামাটির সাধারণ মানুষের মনে আতংক বিরাজ করছে। রাঙ্গামাটির পরিস্থিতি যাতে কেউ অশান্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে সময় থাকতে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করা উচিত বলে স্থানীয় সচেতন মহল মত দিয়েছেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31