লিচুবাগান ফেরিঘাটে ব্রিজ নির্মাণে সেতু বিভাগের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এলাকা পরিদর্শন

॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥ লিচুবাগানে কর্ণফুলী নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য গত ৪ দশক ধরে স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়ে আসছিলেন। লিচুবাগান ফেরিঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ব্যাপক লেখালেখি হয়। কিন্তু এতদিন লিচুবাগান ফেরিঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি। অবশেষে লিচুবাগানে ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্য যাচাই করতে বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সরকারের সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে উর্দ্ধতন তিনজন প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন টিমে ছিলেন বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদ উজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ।
জানা গেছে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজারের সাথে সহজ যোগাযোগের জন্য লিচুবাগানে একটি ব্রিজ অত্যন্ত জরুরী। প্রতিদিন এই সড়কে ৫ শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু ফেরি পারাপারের ক্ষেত্রে এসে যোগাযোগ থমকে যায়। ফেরীর জন্য কমপক্ষে আধা ঘন্টা সময় নষ্ট হয়। আর বৃষ্টি বেশি হলে অথবা কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়লে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে ব্রিজ নির্মাণ বিষয়ে সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শনে আসার খবর পেয়ে সর্বস্তরের জনগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন জানান, কর্ণফুলী নদীতে সহজ যোগাযোগের জন্য ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করতে তাঁরা ১৯ জুলাই কাপ্তাই আসেন। পরিদর্শনকালে তাঁদের সাথে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দিলদার হোসেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রুহুল আমিন।
কর্ণফুলী নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে লিচুবাগান ফেরিঘাট ছাড়াও আরো তিনটি স্থান পরিদর্শন করা হয় বলে জানা গেছে। ঐ স্থান গুলো হলো কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম স্কুল ঘাট, চিৎমরম বাজার ঘাট ও চিৎমরম মুসলিমপাড়া ঘাট। কোথায় ব্রিজ নির্মাণ করলে সর্বস্তরের জনগণ বেশি উপকৃত হবেন এটাও সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে যাচাই করা হয়। তবে লিচুবাগানে ব্রিজ নির্মাণ করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবার জন্য সবাই অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আমরা যেটা প্রত্যক্ষ করেছি তাতে মনে হয়েছে লিচুবাগানেই ব্রিজ নির্মাণ করা বেশি জরুরী। সেতু বিভাগকে তিনি লিচুবাগানের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেবার জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন বলেন, লিচুবাগানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে জনগণের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এখানে ব্রিজ হলে কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন জানান, কোথায় ব্রিজ হবে এটা নির্ধারণে আরো সময় লাগবে। তবে আমরা স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মনোভাব ও পরামর্শ যথাযথভাবে উপস্থাপন করবো। প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধী এবং সবদিক দেখভাল করেই সিদ্ধান্ত নওয়া হবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত জানা গেছে আগামী ২৪ জুলাই জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। ঐ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরার সুযোগ পাবেন জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। জেলা প্রশাসক লিচুবাগানে ব্রিজ নির্মাণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি উত্থাপিত হলে প্রধানমন্ত্রী কোন তথ্য জানতে চাইলে তাৎক্ষনিক যাতে উত্তর দেওয়া যায় সে জন্যই আগাম সব রকম তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে বিশ্বস্থ্য সুত্রে জানা গেছে। তবে এবার লিচুবাগানে অবশ্যই ব্রিজ নির্মিত হবে বলে সবাই প্রত্যাশা করছেন।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031