সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার চট্টগ্রামে নৌ ঘাঁটি ঈশা খাঁয় ‘বানৌজা নবযাত্রা’ ও ‘বানৌজা জয়যাত্রা’ নামের সাবমেরিন দুটির কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন।

নবযাত্রার অধিনায়ক কমান্ডার কে এম মামুনুর রশীদ এবং জয়যাত্রার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাজহারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে কমিশনিং ফরমান নেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে ক্রুরা সাবমেরিনে ওঠেন।

বানৌজা ‘নবযাত্রা’ এবং বানৌজা ‘জয়যাত্রা’ দৈর্ঘ্যে ৭৬ মিটার, প্রস্থে ৭ দশমিক ৬ মিটার। টর্পেডো ও মাইনে সজ্জিত সাবমেরিন দুটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল এবং ডিসপ্লেসমেন্ট এক হাজার ৬০৯ টন।

নৌবাহিনীর এ দুটি যুদ্ধযান শত্রু জাহাজ ও সাবমেরিনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ যুদ্ধকালীন দায়িত্ব পালনে সক্ষম বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে সাবমেরিন দুটির নামফলক উন্মোচন করেন সরকারপ্রধান। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবমেরিন যুগে পদার্পণের এই মুহূর্তিটি উদযাপন করা হয় বহরের বিভিন্ন জাহাজ থেকে বেলুন উড়িয়ে ও রঙিন আতশবাজি পুড়িয়ে।

এরপর জাতীয় সংগীত বাজিয়ে সাবমেরিনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রতীকী জীবন সঞ্চার করা হয় ডুবোজাহাজ দুটিতে।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা অর্জনের পরিচিতিমূলক একটি প্রদর্শনী দেখেন। এরপর সাবমেরিন দুটিকে স্বাগত জানিয়ে তোপধ্বনি করা হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এবং তাকে স্বাগত জানিয়ে সাবমেরিনের ক্রুরা জয়োধ্বনি দেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী সাবমেরিন ঘুরে দেখেন।

চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শিপ ইয়ার্ডে গত বছরের ১৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে সাবমেরিন দুটি হস্তান্তর করেন চীনের রিয়ার অ্যাডমিরাল লিউ জি ঝু।

বাংলাদেশ ও চীনের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ ও ‘সি ট্রায়াল’ শেষে গত ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুটি চট্টগ্রামে আসে।

চীনের ইবাদা ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভির জন্য উচাং শীপইর্য়াড

এক ডজন টাইপ ০৩৫ জি (মিং ক্লাস) সাবমেরিন বানানো হয়েছিল ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে। এর মধ্যে দুটি ২০১৬ সালে কিনে নেয় বাংলাদেশ সরকার।

হস্তান্তরের আগে লিয়াওনান শিপ ইয়ার্ডে সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে ডুবোজাহাজ দুটির সামরিক ক্ষমতা ও কার্যক্ষমতা বাড়ানো হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে সাবমেরিন দুটি নতুন নাম পেল।

প্রধানমন্ত্রী  এ অনুষ্ঠানে সাবমেরিন দুটির জন্য বেইজ সাপোর্ট ফ্যাসিলিটিজের উদ্বোধন এবং ডুবোজাহাজের জন্য পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি ‘বিএনএস শেখ হাসিনার’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তিনি সকালে চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ তাকে স্বাগত জানান।

মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধান, সংসদ সদস্য, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।

বিকালে পতেঙ্গা বোট ক্লাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে বাস্তবায়িত ১৪ কোটি লিটার ধারণ ক্ষমতার ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার’ প্রকল্পের উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031