সাইনবোর্ড সর্বস্ব এনজিও সিসিডিআর : কাউখালী ও রাঙ্গুনীয়া থেকে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ কথিত চেয়ারম্যানসহ তিনজন আটক

॥ কাউখালী প্রতিনিধি ॥ ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাঙ্গামাটির সাইনবোর্ড সর্বস্ব এনজিও সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট এন্ড রিসার্স (সিসিডিআর)’র নির্বাহী পরিচালকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে গ্রাহকরা। গত সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকশ গ্রাহক রাঙ্গুনীয়ার গোচরা চমৌহনী অফিস ঘেরাও করে তাদের আটক করে। কাউখালীর অতিরিক্তি দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমনী আক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটকতৃরা হলো, সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, প্রোগ্রাম কোঅডিনিটর মোঃ জালাল উদ্দিন (৩২), কাউখালী ব্রাঞ্চ ম্যানেজার লিটন চাকমা। তবে আটকৃত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলামকে রাঙ্গুনীয়া থেকে কাউখালী আনার পথে রানীহাট শাখার গ্রাহকরা পথিমধ্যে নামিয়ে সেখানে আটকে রাখে। বাকী দুজন বর্তমানে কাউখালী থানা হেফাজতে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, রাঙ্গামাটির স্বর্ণটিলা এলাকায় অবস্থিত স্থানীয় এনজিও সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট এন্ড রিসার্স (সিসিডিআর)। যার নির্বাহী পরিচালক মোঃ জাহেদুল ইসলাম নামে ওখানকারই এক ব্যক্তি। ২০১২ সালে জানুয়ারীতে ব্যাপক প্রচারনা চালিয়ে লোক নিয়োগের মাধ্যমে কাউখালী  উপজেলার কচুখালীতে শাখা অফিস চালু করে। একই বছরে  পাশ্ববর্তী রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রানীরহাট বাজার ও গোচরা চমৌহনী বাজারে আরো দুটি শাখা খোলে।
গত ৭ বছরে তিন শাখার প্রায় দুই হাজারেরও বেশী গ্রাহক সৃষ্টি করেছে সংস্থাটি। ৫ বছর মেয়াদে দৈনিক ২০-২০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় আদায়ের মাধ্যমে তিন শাখার উল্লেখিত গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে প্রায় চার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল কাউখালী ব্রাঞ্চই রয়েছে ৯৮০ জন গ্রাহক। যাদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে ২ কোটি টাকার বেশী। অপর দিকে রানীহাট ও গোচরা চৌমুহনী শাখা মিলে এক হাজারেরও বেশী গ্রাহক থেকে আদায় করা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
কাউখালী শাখার একজন গ্রাহক মাইগ্যামছড়া গ্রামের সাংমা মারমা (২৭), কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। ২০১২ সাল থেকে দৈনিক ২০ টাকা হারে ৩৫৭২০ টাকা এ পর্যন্ত জমা করছেন। কলমপতি ইউনিয়নের সাগর দাশ দৈনিক ৫০ টাকা হারে সাত বছরে জমিয়েছেন ৮৯৭০০ টাকা। টাকা আত্মসাৎকারীদের আটকের খবরে ছুটে আসেন ইউএনও অফিসে। কিন্তু সেখান থেকে সন্তোষজনক কোন উত্তর না পাওয়ায় এক পর্যায়ে কেঁদে কেঁদেই বাড়ী চলে গেলেন। এভাবে শত শত গ্রাহক টাকার আশায় প্রতিদিন ব্র্যাঞ্চ অফিসের দরজায় কড়া নাড়ছেন এবং হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরছেন।
কাউখালীর ৯৮০ জন গ্রাহকের মধ্যে চার শতাধিক গ্রাহকের সঞ্চয় হিসাবের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে আরো ৬ মাস পূর্বে। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়া গ্রাহকরা নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস পরেও তাদের টাকা ফেরৎ না পাওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তারা ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজারকে চাপ দেয় এবং অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তাতেও কোন কাজ না হওয়ায় ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজারের সহায়তায় আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ও প্রোগ্রাম কোঅডিনিটর মোঃ জালাল উদ্দিনকে গোচরা চমৌহনী অফিস থেকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এসময় কয়েকশ গ্রাহক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। পরে ইউএনওর আশ্বাসারে প্রেক্ষিতে এবং স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আটককৃতদের কাউখালী পুলিশে সপর্দ করা হয়।
কিন্তু ঘটনার মূল হোতা জাহিদুল ইসলামকে রানীরহাট শাখার গ্রাহকরা সেখানে আটকে রাখায় এবং উত্তেজিত গ্রহকদের হাত থেকে রক্ষা ও আইনগত বিষয়ে সহায়তা প্রদানের জন্য রাঙ্গুনীয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহায়তা চেয়েছেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমনী আক্তার। তিনি জানান, চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম যাতে কোনভাবে পালাতে না পারে রাঙ্গুনীয়া পুলিশের মাধ্যমে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে র‌্যালি ও দোয়া জুলাই এর গণঅভূত্থানে ছাত্র জনতার রক্তদান এবং অসংখ্যজনের পঙ্গুত্ব বরণের মধ্যদিয়ে আমরা নতুন দেশ পেলাম —–প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031