চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় পরিবেশ মন্ত্রী : অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদসহ গ্যাস,পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে

সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ বসবাসকারীগনের মধ্যে ২০১৯ সালে কোন ধরণের প্রাণহানি ঘটেনি। এটা জেলা প্রশাসন ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তৎপরতার জন্য সম্ভব হয়েছে। পাহাড় কাটা সম্ভব। পাহাড় নির্মাণ করা সম্বব নয়। পাহাড় সৌন্দযের প্রতীক। পাহাড়ের নৈসর্গীক সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হলে পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ ও তাদের ব্যবহৃত গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্টিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২০তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরে সার্কিট হাউজে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের অবশ্যই নিরাপদ স্থানে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার ঝুঁিক নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করতে দিবেন না। তিনি আরো বলেন, সিডিএ‘র নির্মাণাধীন ৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফৌজদারহাট-বায়জিদ বোস্তামির রাস্তা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পাহাড় কেটে নির্মাণ করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের নির্দেশ তারা আধৌ মান্য করেনি। এতে পরিবেশের ভাবমুুর্তি নষ্ট হচ্ছে। মতিঝর্ণা পাহাড়ে অবৈধভাবে ৪তলা ভবনসহ অর্ধশতাধিক ভবন রয়েছে । সেখানে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ রয়েছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। অবৈধ জায়গায় পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ কেন দেওয়া হয়েছে বলে প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী।, ফৌজদারহাট-বায়জিদ বোস্তামির রাস্তার পাশে (সীতাকুন্ড-জঙ্গল সলিমপুর) পাহাড় কেটে লেক ভরাট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। দেশের স্বার্থেই পরিবেশের সুরক্ষা করা প্রয়োজন ।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব মাহামুদুল হাসান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. রফিক আহমেদ। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. রেজাউল করিম, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমূখ। সভায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, কেজিডিসিএল ও গণপূর্তসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভার পূর্বে মন্ত্রী লালখান বাজারস্থ মতিঝর্ণা পাহাড়, সিডিএ‘র নির্মাণাধীন বায়জিদ বোস্তামি-ফৌজদারহাট হাইওয়ে লিংক রোডের পাহাড় কর্তন, আরেফিন নগর পাহাড় কর্তন, কালুরঘাট শিল্প নগরী পরিদর্শন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। এত আইনগত বৈধতাও আরো বাড়বে।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা আরো শক্তিশালী করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবল কাঠামো বর্ধিত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসেন ।
অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার দায়ে সিডিএকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা মানহানিকর বলে মন্তব্য করেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন সামস।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30