বান্দরবানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা কেএনএফ’র সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়েছে বান্দরবানের ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ

॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’র সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়েছে বান্দরবানের ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে ঐ সংগঠনটির সাথে অপর পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জড়িত থাকার দাবিও অস্বীকার করেছেন তারা। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের অডিটরিয়ামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
এসময় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি খুশিরায় ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, বম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি লালজারলম বম, এ্যাডভোকেট কাজী মাহাতুল হোসেন যতœ, চাকমা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা, ¤্রাে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রাংলাই ¤্রাে সহ প্রমুখ। এছাড়া সভায় বান্দরবানের বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান কারবারিরা অংশ নেয়।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামে বিপদগামী আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, শান্তির আলোচনাকালে কেএনএফ ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর যে হামলা চালিয়েছে সেটি জঘন্য অপরাধ। কেএনএফের অপরাধমূলক কর্মকা-ের কারণের গ্রাম ছাড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষ গ্রেফতার হয়েছে। যার ফলে বম সম্প্রদায়ের সকল জাতিগোষ্ঠীরা বিপদগ্রস্থের পাশাপাশি ক্ষতির প্রভাব পড়ছে পুরো জেলায়। তাই বিপদগামী পথ থেকে কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা আরো বলেন, পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়ে আনতে জীবন বাজি রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি কেএনএফের সাথে আলোচনায় বসেছে। আলোচনায় কেএনএফ সদস্যরা যেসব দাবি-দাওয়া করেছে সেটি জন্য সরকার কাজ করছে। সরকার তাদের জন্য পূর্ণবাসন করাও প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু আলোচনাকালে কেএনএফ সদস্যরা এভাবে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র, ও অর্থ লুটপাটের ঘটনা ঘটাবে সেটি ছিল কল্পনার বাইরে। ফলে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চলে গেছে। তাদের এই অপরাধমূলক কার্যকলাপের কারণের বর্তমানে পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বম সম্প্রদায়সহ পাহাড়ের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী।
বক্তারা আরো বলেন, কেএনএফ সদস্যরা যেসব অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন চেয়েছেন সেটি কখনো সম্ভব নয়। তারা যদি এভাবে অস্ত্র হাতে নিয়ে সন্ত্রাসীর কার্যক্রম চালাতে থাকে তাহলে ঘটনা কোন দিকে যাবে সেটি বলার বাইরে। কেএনএফের প্রধান নাথাম বম আলোচনায় না আসলে কখনো সমাধান হওয়ার সম্ভব নয়। তাদেরকে স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা নতুন নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। তাই সেসব প্রস্তাবকে নিয়ে সামনে কেএনএফ সদস্যদের সাথে আলোচনা পথে এগিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।
উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে কেএনএফ সদস্যরা অস্ত্র গুলি ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930