খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ৮কি:মি: পাঁয়ে হেটে স্কুলে ৮শতাধিক শিক্ষার্থী: রাস্তার অভাবে পশ্চাৎপদ ২টি ত্রিপুরা গ্রাম

॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি থেকে ॥ খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালায় আওতাধীন মেরুং এলাকার হৈমন্তী ত্রিপুরা, বয়স আনুমানিক ৪-৫বছর। প্রচন্ড তাপদাহে স্কুল সময়ে রাস্তার পাশে ঘটকি থেকে অনবরত পানি পান করছেন। মনে হচ্ছে যেন অনেকদিনের তৃষ্ণায় ভূগছেন কোমলমতি এই শিশু। এমন দৃশ্য চোখে পড়ার পর কাছে গিয়ে কুশল বিনিময়ের পর কোমলমিত শিশুটির মুখে অভিযোগ আসে জোরেসোরে। হৈমন্তী বলেন, ‘‘রাস্তা নাই, স্কুলে যেতে হাঁটতে হয় প্রায় ৮কি:মি:। বর্ষা মৌসুমেই হৈমন্তীর মতই অনেকেই যেতে পারে না স্কুলে।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নস্থ দীঘিনালা সড়কের ৮কি:মি: এলাকা হতে রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়া ও বগড়াছড়া পর্যন্ত প্রায় ৯কি:মি: সড়কটি দীর্ঘকাল যাবত রাস্তাহীন। পাড়া দু’টি যেমনি দুর্গম ও তেমনি পশ্চাৎপদ। গত নভেম্বর ২০১০ সালে স্থাপিত ইউনিসেফ পরিচালিত রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়া, আলোঘর শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ও ২০১৩ সালে স্থাপিত রথিচন্দ্র বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগড়াছড়া পাড়া কেন্দ্র, বগড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮শতাধিক। তাও আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো অবস্থাও নাজুক। প্রায় ২শতাধিক পরিবারের কৃষি ও উঁচুভূমি থাকলেও রাস্তা ও বিদ্যুৎহীন এই দুটি গ্রামে সরকারের উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া দেখা যায়নি, নেই কোন আধুনিকতার ছোঁয়া। স্থানীয় অনেকেই গ্রাম দুটি পশ্চাৎপদ থাকার অন্যতম কারন হিসেবে রাস্তার অভাবকেই দায়ী করেছে।
এ বিষয়ে রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়ার কার্বারী গুণাধর ত্রিপুরা বলেছেন, দীর্ঘকাল যাবত এই এলাকার শত শত পরিবার ও স্কুল শিক্ষার্থী চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছে। রাস্তা না থাকায় ছোট বড় সকল প্রকার যান চলাচল করতে না পারায় কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত কৃষিজপণ্যেরও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। তিনি রাস্তাটি জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
এদিকে, রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রামেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, ১৯৯০সালে বেসরকারি ভাবে স্কুলটি নির্মাণ হলেও স্কুলটি এখনো কাঁচা। স্কুলে বর্তমানে ১৫০জনের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা দুর-দুরান্ত থেকে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করে। প্রচন্ড গরম ও বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের খুবই দুর্ভোগে পড়ে। তিনিও রাস্তা নির্মাণের তাগিদ দেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30