ফটিকছড়িতে বাঙালি ছেলেকে বিয়ের করার জেরে ৭৮ জনকে জিম্মি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক ত্রিপুরা তরুণী বাঙালি ছেলেকে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করার জেরে সেখানকার ১৯টি ত্রিপুরা পরিবারের ৭৮ জনকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়নের সোনারখীল এলাকার নাছিয়া চা বাগান থেকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তাদের তুলে নিয়ে যায়।

জিম্মির শিকার পরিবারগুলো ওই চা বাগানের শ্রমিক বলে জানা গেছে। ওই মেয়েটিকে ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত চা বাগানটিতে কোন ত্রিপুরা শ্রমিককে কাজ করতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসী গ্রুপটি।

গত শুক্রবার এই ঘটনা ঘটলেও ভয়ে এখনও কেউ অভিযোগ দেননি বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ মিটিংয়ের কথা বলে বাগানে কর্মরত ১৯টি ত্রিপুরা শ্রমিক পরিবারের ৭৮ জন সদস্যকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীরা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের রামগড়ের গুজাপাড়া, মরা কয়লা, গরু কাটা, মাঝিরামপাড়া প্রভৃতি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ।

সন্ত্রাসীরা বাগান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, বাঙালি ছেলেকে ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করা ত্রিপুরা চা শ্রমিক শব্দ মিলা ত্রিপুরাকে তাদের কাছে এনে না দেয়া পর্যন্ত ওই শ্রমিকদের ফেরৎ দেয়া হবে না।

বাগানের শ্রমিকরা জানান,  ১৫ এপ্রিল তশিরাম ত্রিপুরার কন্যা চা শ্রমিক শব্দ মিলা ত্রিপুরা (২০) সোনারখীলের হাক্কিটিলা গ্রামের সুরত আলীর ছেলে আরিফের(২৫) সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পালিয়ে বিয়ে করার পর এনিয়ে ছেলে বা মেয়ের কোন পরিবার থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। এর ৩/৪ দিন পর ঘটনাটি প্রকাশ হলে পার্বত্য এলাকার পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপটি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। শুক্রবার তারা বাগান থেকে সকল ত্রিপুরা চা শ্রমিকদের সপরিবারে তুলে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে শব্দ মিলা ত্রিপুরার মা-বাবা ও ভাই-বোনও রয়েছে।

বাগানের ব্যবস্থাপক মনির হায়দার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।

ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতাদের সাথে তিনি ফোনে কথা বলেছেন। তারা তাকে জানিয়েছে ত্রিপুরা মেয়েটিকে তাদের কাছে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত ওই শ্রমিকদের ফেরৎ দেয়া হবে না।

চেয়ারম্যান বলেন, ঘটনাটি তিনি রামগড় বিজিবি জোন কমান্ডার, রামগড়ের পাতাছড়ার ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছেন।

ভুজপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনার কথা তিনি শুনেননি। কেউ কোন অভিযোগও করেনি।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031