দীঘিনালায় চাকমা ভাষার বর্ণমালা লিখাও পড়ার প্রশিক্ষন
নিচ্ছে পাহাড়ি নারী-পুরুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা
॥ সোহেল রানা দীঘিনালা ॥ পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত উপজাতিয়দের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠি চাকমা সম্প্রদায়, তাদের নিজস্ব ভাষা, সাংস্কৃতি রয়েছ।
চাকমা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা হলেও এ ভাষার বর্ণমালা সর্ম্পকে আমাদের পরিচিতি ছিলাম না। প্রশিক্ষণ কোর্সে এসে চাকমা বর্ণমালা সর্ম্পকে জানতে পেরেছি। এখন চাকমা বর্ণমালা লিখতে ও চাকমা ভাষায় লেখতে ও পড়তে পারি। কথাগুলো বললেন, ডানে আটারক ছড়া গ্রামের এবং কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা জানান।
শনিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার দক্ষিণ আটারক ছড়া গ্রামে রেয়্যাংকার্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে জানাযায়, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ‘চাঙমা লেগা শিক্ষা কোর্স’ নামের কোর্সে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, স্কুল কলেজ ও বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। তিন মাস ব্যাপী এ প্রশিক্ষণে চাকমা বর্ণমালার পরিচয় সর্ম্পকে ধারণা দেয়া হবে। এতে অংশ নেয়া প্রশিক্ষণার্থীরা চাকমা ভাষার বর্ণমালায় লেখতে ও পড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া অপর শিক্ষার্থী এবং দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আকাশী চাকমা জানান, সব ভাষারই বর্ণমালা আছে। চাকমা ভাষার বর্ণমালা থাকার পরও বর্ণমালা’র সাথে পরিচয় ছিল না। এ প্রশ্ক্ষিণে অংশ নিয়ে চাকমা ভাষা’র বর্ণমালায় পড়তে পারছি।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া গৃহিনী নমিতা চাকমা (৪০) জানান, এ প্রশিক্ষণে আমার ছেলেও অংশ নিয়েছে। চাকমা বর্ণমালা সর্ম্পকে জানার জন্যই এ প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া।
এব্যাপারে, ‘চাঙমা লেগা শিকখা কোর্স’ এর প্রশিক্ষক সুমনা চাকমা জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হয় এ প্রশিক্ষণ কোর্স। তিনমাস ব্যাপী এ বিনামূল্যের প্রশিক্ষণে ৬০জন স্কুল কলেজ’সহ বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ অংশ নেয়। এ প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ হলো, চাকমা ভাষার পরিচয়সহ ভাষা’র বিভিন্ন বর্ণের সাথে পরিচয় করানো। যাতে, চাকমা ভাষায় কোন প্রকার গল্প, কবিতা পড়তে পারে। তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বার্থকতা হবে তখনই, যখন এ প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ শেষে চাকমা ভাষায় গল্প ও কবিতা লিখতে পারার সক্ষমতা অজর্ণ করতে পারবে।
এব্যাপারে ‘চাঙমা সাহিত্য বা’ (চাকমা ভাষায় সাহিত্য পত্রিকা)এর সদস্য সচিব এবং সাঙু পাঠাগার এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইনজেব চাকমা জানান, মাতৃভাষা সবারই জানা দরকার। নিজ ভাষার বর্নমালা জানা না থাকলে, আপনি যতই শিক্ষিত হোন কেন, তাকে শিক্ষিত বলা যাবে না। বর্তমান সরকারের প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে চাকমা ভাষার বই চালুর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন,চাকমা সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্যে রুপান্তরিত করার জন্যে সরকারের পাশাপাশি আমরা কাজ করছি।