মাধ্যমিকে পাস ৮০.৩৫ %, চট্টগ্রামে এগিয়ে মেয়েরা

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার কাছে ফলাফলের এই অনুলিপি হস্তান্তর করেন।

বেলা ১২টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। দুপুর ২টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবে।

গত বছর এ পরীক্ষায় ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।

সেই হিসাবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে পাঁচ হাজার।

ফলাফল হস্তান্তরের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাসের হার কমায় তিনি বিস্মিত নন।

“এবার শান্তিপূর্ণ, নকলমুক্ত পরিবেশে সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার পাসের হার অন্যান্য বছরের চেয়ে কম। এক্সামিনাররা খাতা নিয়ে যেত, কিন্তু ভালো করে দেখত না। এবার খাতা দেখার ক্ষেত্রে গাফলতি ছিল না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খাতা দেখার পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে, তা সময়োপযোগী।”

যারা এবারের পরীক্ষার কৃতকার্য হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি ছেলেদের আরও মনোযোগী হতে বলেন।

হাওর, দ্বীপ ও পার্বত্য অঞ্চলে আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কেউ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকবে- সেটা চাই না।”

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত এবারের এসএসসির তত্ত্বীয় এবং ৪ থেকে ১১ মার্চ ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়।

দশ বোর্ডে এবার মোট ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৬২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন।

মন্ত্রী জানান, আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসিতে ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

আট বোর্ডে ৯৭ হাজার ৯৬৪ জন, দাখিলে ২ হাজার ৬১০ জন এবং কারিগরিতে ৪ হাজার ১৮৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

পাসের হারে এবারও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্রের বিপরীতে ৮০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিকে পাস করেছে।

এসএমএসে ফল

যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস করে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।

SSC/DAKHIL লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখতে হবে, এরপর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ফল জানা যাবে।

এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (http://www.educationboardresults.gov.bd) থেকেও পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (www.educationboardresults.gov.bd) ওয়েবসাইটে গিয়ে ফল ডাউনলোড করতে পারবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কোনো হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।

তবে বিশেষ প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।

ফল পুনঃনিরীক্ষা

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।

ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেওয়া হবে।

আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।

প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।

যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে, যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে।

একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।

 

চট্টগ্রাম বোর্ডের

গত বছর ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও এবার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। এবছর সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।

এবছর চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৪১২ জন, ছেলেদের সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৪৮৫ জন।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, মেয়েদের পাসের হার ৮৪ শতাংশ আর ছেলেদের ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গত বছর ছিল যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৯৯ ও ৯০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

৮ হাজার ৩৪৪ জন জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ৪ হাজার ২৯১ জন ও ছাত্র সংখ্যা ৪ হাজার ৫৩ জন। গত বছর ৪ হাজার ১১৯ ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।

বিভাগওয়ারি ফল বিশ্লেষণেও দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেরা দশমিক ০৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও মানবিকে মেয়েরা ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষায় ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে আছে।

বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবছর মেয়েদের সংখ্যা বেড়েছে।

গত বছর বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেয়েদের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৪২ জন এবং তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ জন।

মানবিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছেলেদের মধ্যে ১০ জন আর মেয়েদের ৩৩ জন। আর ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৪৪ জন ছাত্রী এবং ২২৪ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে।

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031