॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ খাড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্রে করে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় নয় কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সহিংসতার ঘটনায় দু’টি সরকারি অফিস, ৮৯টি দোকান, ৪টি ব্যাংক, ৮৫টি ভাসমান দোকান, দু’টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ৪৬টি পরিবহন, দু’টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং একটি পুলিশ বক্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নিদের্শক্রমে ক্ষতিগ্রস্তদের যতটুকু সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় রাঙ্গামাটির কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলাসহ দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এই দুটি মামলার আলোকে তদন্ত চলমান রয়েছে।
রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন বলের, এই পর্যন্ত থানায় একটি হত্যা মামলাসহ দুইটি মামলা হয়েছে। অপরাধীদের কোন ক্ষমা নাই। সহিংসতার ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের আটক করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশ কাজ শুরু করেছে। আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীকে দ্রুত খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।
উল্লেখ্য: গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়ি জেলার পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে ১৯ সেপ্টেম্বর জেলার দীঘিনালা উপজেলার লারমা স্কয়ার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের রূপ নেয়। ওই ঘটনায় দীঘিনালায় তিনজন নিহত হয়।
এ ঘটনার উত্তাপ পরদিন রাঙ্গামাটি শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরে শত শত পাহাড়ি জনতা মিছিল বের করে বনরূপায় আসলে সেই মিছিল থেকে হঠাৎ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের রূপ নেয়। এসময় উভয়পক্ষের কিছু দুর্বৃত্ত দোকানপাট ও স্থাপনায় ভাঙচুরসহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এই সহিংস ঘটনায় রাঙ্গামাটিতে এক যুবক নিহত হয়। আর এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের প্রায় ৬৩ জন আহত হয়।