রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে সবাই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, এই সমস্যা সমাধানে সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।
মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসাও রাষ্ট্রদূতরা করেছেন বলে জানান তিনি।
দশকের পর দশক ধরে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে সম্প্রতি আরও তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এরপর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রতিটি দেশের প্রতিনিধিই একবাক্যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশের নেওয়া ভূমিকা সমর্থন করেছেন। এত বিরাট জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়, চিকিৎসা ও খাদ্যের ব্যবস্থা করার জন্য নিখাদ প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা।”
এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর ভার বহন করা দুঃসাধ্য বলে সরকারের মন্ত্রীরা বলে আসছেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে একটি ‘জাতীয় সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা আগে থেকেই এখানে (বাংলাদেশ) ছিল, এরপর গত মাসের ঘটনার পর আরও তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।”
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ অগাস্ট সেনা ও পুলিশ চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়। এতে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা এবং ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান।
বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমার সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে আসছে। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিও সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
মাহমুদ আলী বলেন, “সব দেশই রোহিঙ্গা কিলিংকে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে। তারা বলেছে-আমরা সবাই তোমাদের (বাংলাদেশ) সাহায্য করব।”
রাখাইন (এক সময়ের আরাকান) রাজ্যে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের দেশের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার সরকার।
রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারেরই নাগরিক, ইতিহাস থেকে তার তথ্য মেলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সমস্যা আমরা তৈরি করিনি। মিয়ানমার সমস্যা তৈরি করেছে , মিয়ানমারকেই তা সমাধান করতে হবে।”
ওই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ‘সেইফ জোন’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে। পাশাপাশি সন্ত্রাস দমনে সীমান্তে যৌথ অভিযান চালাতেও মিয়ানমারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930