॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তৃনমূল পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহন বিষয়ে সাধারণ মানুষদের আরো সচেতন করতে সংশ্লিষ্টদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। তিনি বলেন, শহরের মানুষ এ বিষয়ে এখন অনেকটা সচেতন তাই প্রত্যান্ত অঞ্চলে বসবাসরত পরিবারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাঠকর্মীদের এ বিষয়ে আরো সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশের লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭কোটি এবং বর্তমানে ১৬কোটির অধিক। দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এক সময় এ দেশ ভারসাম্য হারাবে। তাই এখন থেকেই সাধারণ জনগনদের সচেতন করতে হবে। পরিকল্পিত পরিবার গঠনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি পরিষদে হস্থান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সোমবার (১৮সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ছাদেক আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও হস্থান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ বেবী ত্রিপুরা বলেন, রাঙ্গামাটিতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উদ্যোগে আগামী ২০-২১ সেপ্টেম্বর স্থায়ী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সেবা গ্রহীতা মেলা-২০১৭ শুরু হবে। গ্রহীতা মেলায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে ইচ্ছুক পুরুষ ও মহিলাদের পদ্ধতি প্রদান করা হবে। তিনি সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের তাদের প্রতিবেশী ও সাধারণ জনগনদের এ মেলা হতে সেবা গ্রহণের বিষয়টি অবগত করার অনুরোধ জানান।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, জেলায় শিক্ষার গুনগতমান উন্নয়নে বিভিন্ন উপজেলার উচ্চ বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হচ্চে। তিনি জেএসসি ও এসএসসি পরিক্ষার্থীদের পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করার লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় পরামর্শক সভা করার জন্য অনুরোধ জানান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, জেলায় সহকারী শিক্ষক শুন্যপদ পূরনে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শীর্ঘই জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্কুলগুলোতে শিক্ষক প্রদান করা হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন বলেন, জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গা দখলের বিষয়ে প্রশাসনকে বার বার অবগত করা হয়েছে। উচ্ছেদের বিষয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় নের্তৃবৃন্দদের সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।
স্বাস্থ্য প্রকেশৈল কর্মকর্তা বলেন, জেলার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মূল ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে রির্টানিং ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন স্থাপনা ও কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ অনেকাংশে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন অর্থ বছরে বিভিন্ন উপজেলায় নির্মানের লক্ষ্যে ৫৩টি নতুন প্রকল্পের ডিপিপি মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। অনুমোদন হলে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রকৃত মৎস্যচাষীদের মধ্যে পোনা বিতরন করা হচ্ছে।
জেলা সমাজ সেবা বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা’সহ অন্যান্যভাতা সমূহ সঠিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে বেকার যুবদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। আগামী মাস থেকে নতুন করে বিভিন্ন বিষয়ে বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
সরকারী গণগ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকারী গণগ্রন্থাগারের উদ্দ্যেগে রচনা, চিত্রাংকন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান করা হয়েছে। চলতি মাসে পুরস্কার বিকরনী অনুষ্ঠান করা হবে। তিনি বলেন, সরকারী গণগ্রন্থাগারকে আরো বেগবান করতে মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারী শিশু পরিবার কার্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতি সপ্তাহে বই বিতরণ করা হবে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স এর ব্যবস্থাপক জানান, বর্তমানে অতিবৃষ্টির ফলে পর্যটনের ঝুলন্ত ব্রীজটি পানিতে ডুবে গেছে তাই পর্যটক কম হচ্ছে। আগামী মাস হতে পর্যটকদের আগমন ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় হস্থান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগন তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বিভিন্ন সমস্য ও সম্ভবনার কথা তুলে ধরে মতামত ও সু পরামর্শ প্রদান করেন।
সভায় উত্থাপিত যেসব সমস্য ও বিষয়গুলো নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরিষদের সর্বাত্বক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন চেয়ারম্যান ও সদস্যগন।