জুমের সোনালী পাকা ধানে ছেঁয়ে গেছে পাহাড়

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসের কারণে জুমের আবাদি ফসল কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও এ বছর পাহাড়ে জুমের ফলন ভালো হয়েছে। জুমের সোনালী পাকা ধানে ছেয়ে গেছে পাহাড়। বর্তমানে জুমিয়ারা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জুমের পাকা ধান বাড়ীতে তোলা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
পাহাড়ের ঢালে বিশেষ ধরনের চাষাবাদকে বলা হয় জুম চাষ। সাধারনত পৌষ-মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালে পরিস্কার করে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে মাটি উপযুক্ত করে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুঁচালো দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধানসহ নানা সব্জির বীজ বপন করা হয়। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে জুমের ধান কাটা শুরু করা হয়। পাহাড়ের জুমিয়ারা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সোনালী জুম ধান ঘরে তোলা নিয়ে। জুমিয়াদের প্রতিটি পরিবারের চলছে এখন ধান কাটার উৎসব।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকাসহ ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে এ বছর জুমে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। তবে চিন্তিত জুম চাষীরা। কারণ জুম থেকে উৎপাদিত ধান সারা বছরের খোরাক জোটে না। তারপরও এ বছর জুম ধান ভালো হওয়ায় সন্তুষ্ট জুম চাষীরা।
এব্যাপারে রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক জানান, এ বছর রাঙ্গামাটি জেলায় জুম ধান ফসলের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৫০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪০হেক্টর। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছে ১ দশমিক ২৫ মেট্রিক টন। তবে গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসের কারণে ৯১০ হেক্টর জুমের আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জুম ধানের মধ্যে রয়েছে গেলং, কামরাং, মেরুং, রাঙ্গী, কবরকসহ ১২ জাতের ধান। এছাড়া জুমে ধানের সাথে হলুদ, মরিচ, শীম, ঢেঢ়সসহ নানান জাতের অর্থকরী ফসল উৎপাদিত হয়ে থাকে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা এই ঐতিহ্যবাহী জুম জুম চাষ পদ্ধতিকে আধুনিকায়ন ও জুম চাষীদের ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে জুমে ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধি পেতো। এতে করে একদিকে এই অঞ্চলের খাদ্যর ঘাটতি পূরণ হতো তেমনি প্রান্তিক জুম চাষীদের জীবনমান পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930