॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় রাঙ্গামাটিতে শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে।
শোভাযাত্রাটি ভেদভেদী আমানত বাগের বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে গিয়ে শেষ হয়। সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এস এম শফি কামাল, পুলিশ সুপর সাঈদ তারিকুল হাসান শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কয় থেকে বেলুন উড়িয়ে শোভা যাত্রা উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।
শোভাযাত্রায় রাঙ্গামাটি বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
শোভাযাত্রা শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে আলোচনা সভায় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙ্গামাটি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল রিদওয়ান, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এস এম শফি কামাল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে সমগ্র জাতিকে মুক্তির দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের ৭ মার্চের সেই ভাষণটি উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত করেছিল এ দেশের জাতিকে। সেই ভাষণ থেকেই মুক্তিকামী বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দিক-নির্দেশনা পেয়েছিল, পেয়েছিল সংগ্রামের অনুপ্রেরণা। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর জ্বালাময়ী সেই ভাষণে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত হয়েই বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার মধ্যদিয়ে লাল সবুজের পতাকা। আর বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্জন বাঙ্গালী জাতির জন্য অত্যন্ত গৌরবের। এই অর্জন দেশকে আরো উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হবে বলে মতব্যক্ত করেন।
সভায় মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের দরবারে আজ স্বীকৃত। এই ভাষণ দিয়েছিলো বলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানুষ ঝাপিয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ১৮ মিনিটের এই ভাষণের প্রতিটি লাইন প্রতিটি অক্ষরে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিলো। ৭ মার্চের এই ভাষণের প্রতিটি লাইন অর্থবহ এটি একটি ইতিহাস হিসাবে সারা জীবন থাকবে।
রাজস্থলী সংবাদদাতা জানান, রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলায় হাজারো জনসমারোহের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গ বন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর “মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিষ্টার” এ অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে স্বীকৃতি লাভ করায় গত ২৫শে নভেম্বর সকাল ১০ ঘটিকার সময় সারা দেশের ন্যায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আনন্দ শোভা যাত্রা রাজস্থলী বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি বাস স্ট্যান্ড হ্নারামুখ বাজার ঘুড়ে উপজেলা গণমিলনায়তনে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুশফিকুর রহমান, প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ক্রয়সাউ মারমা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিরার পরিকল্পা কর্মকর্তা ডাঃ রুইহ্লাঅং মারমা,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উবাচ মারমা, এম পি প্রতিনিধি সুভাষ চন্দ্র বাচ্চু, মহিলা এম পি প্রতিনিধি লংবতি ত্রিপুরা, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য রাখাল চন্দ্র দাশ, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ নুরুন্নবী খন্দকার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান, রাজস্থলী কলেজের অধ্যক্ষ উপানন্দ দাশ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পুচিংমং মারমা, ইউপি চেয়ারম্যান সুশান্ত প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা, উথান মারমা, ঞোমং মারমা প্রমূখ। রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা বলেন ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা অর্জনে প্রেরনা হিসেবে কাজ করেছিল। তিনি আরো বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম যদি এদেশে না হত, তাহলে আমরা এই স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখতে পেতাম না। বঙ্গবন্ধুর জন্মের পর থেকেই তিনি অধিকার হারা বাঙ্গালী জাতিকে মুক্ত করার সংকল্পে সমাজনীতি ও রাজনীতি পরিচালনা করেছিলেন। সভা ও আনন্দ শোভা যাত্রায় উপজেলার স্ব-স্ব বিভাগের কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষিকা, সাংবাদিক সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিলেন। চিত্রাংকন, বক্তব্য প্রদান প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন কারিদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়।