হেদায়েতি বয়ান, ধর্মীয় আলোচনা ও ইবাদতের মধ্য দিয়ে তিনটি দিন কাটানোর পর রোববার বেলা ১০টা ২০ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়।
বাংলা ও আরবি ভাষায় ২৫ মিনিটের এ মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের।
মোনাজাতে অতীতের সব ভুলের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের সব মুসলমানের মঙ্গল কামনা করা হয়। মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়।
তুরাগতীরের ইজতেমা ময়দান ছাড়াও দক্ষিণে খিলক্ষেত, উত্তরে বোর্ডবাজার, পূর্বে টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী ও পশ্চিমে আশুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় লাখ লাখ মানুষ শামিল হয় এই মোনাজাতে।
আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার হাজারো মুসলমান শীতের মধ্যে পায়ে হেঁটেই রওনা হন টঙ্গীর পথে।
মোনাজাতের আগে ইজতেমা ময়দানে চটের সামিয়ানার নিচে বয়ান শোনেন লাখো মানুষ। ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশেপাশের অলিগলি ও রাস্তায় পাটি, খবরের কাগজ, পলিথিন বিছিয়ে তাতেই অবস্থান নেন অনেকে।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে বহু নারীও এসেছিলেন মোনাজাতে অংশ নিতে। ময়দানে ঢোকার অনুমতি না থাকায় তারা আশপাশের বিভন্ন কারখানা ও আবাসিক ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে হাত তোলেন।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, বিপণিবিতান ও অফিস ছিল বন্ধ। মোনাজাত শেষে টঙ্গী থেকে সবার বাড়ি ফেরার সুবিধার জন্য ১৯টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ।
গত ১২ জানুয়ারি ভোরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ওই পর্বে অংশ নেন ঢাকাসহ ১৭ জেলার মুসলমানরা। চার দিন বিরতি দিয়ে ঢাকা ছাড়াও আরও ১৫ জেলার মুসলমানদের অংশগ্রহণে গত শুক্রবার শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব, যা রোববার শেষ হল।