নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সমস্যা চিহ্নিত করন এবং তা থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে কর্মপন্থা নির্ধারনের জন্য জনদূর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগ এর প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন আজ ২১ মে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দিন এর সাথে তাঁর দফতরে স্বাক্ষাত করেন। এ সময় জনাব সুজন বলেন, পোর্ট কানেকটিং এবং আগ্রাবাদ এক্সেস রোড দুইটি চট্টগ্রামের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ রোড। এ দুইটি রোড দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ী চলাচল করে। ইপিজেড, বন্দর, কাস্টমস ছাড়াও বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবি নারী পুরুষকে প্রতিনিয়তই এ সড়ক দুইটি দিয়ে চলাচল করতে হয়। বন্দর কেন্দ্রিক বিভিন্ন ট্রাক, ট্রেইলর, কাভার ভ্যানের চলাচলও এ রোড দুটিতে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে এ সড়ক দুইটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলতঃ জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি অতিসত্ত্বর এ দুইটি সড়ক জনগন এবং যান চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য মেয়র মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তাছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ডোর টু ডোর কার্যক্রমের প্রশংসা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশন সত্যিকার অর্থেই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চলছে তাতে আমরা সত্যিই আনন্দিত। তাছাড়া প্রায়শই দেখা যায় কোন প্রকার ত্রিপল ছাড়াই ময়লা পরিবহনবাহী গাড়ীগুলো ময়লা আবর্জনা নিয়ে সারা শহর প্রদক্ষিন করে। এ সমস্ত কর্মকান্ড পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে জনাব সুজন অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি পবিত্র রমজান মাসে ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং করার ক্ষেত্রে ইফতার এবং নামাজের সময়সূচী অনুসরন করার অনুরোধ করেন। সম্প্রতি বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিউটিফিকেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিকল্পিত নগরায়নের যে উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে তাতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ সকল কার্যক্রম কিছু নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে সীমাবদ্ধ না রেখে নগরীর অনগ্রসর ওয়ার্ডগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান। তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের ক্ষেত্রে সাধারন নাগরিককে ক্রোকী পরোয়ানায় বাহিরে রেখে সরকারী বেসরকারী যেসব প্রতিষ্টানের হোল্ডিং ট্যাক্স দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী রয়েছে তাদের কাছ থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করার জন্য মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দিন ধৈর্য্য সহকারে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনেন। তিনি নাগরিক উদ্যোগের প্রস্তাবিত বিষয় সমূহের সাথে সহমত পোষন করে বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর নগরীর সড়কগুলোতে ওয়াসা, সিডিএ, টিএন্ডটি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর প্রকল্প সমূহ একই সাথে শুরু হওয়াতে নগরীর মূল সড়কগুলো খোড়াখুড়ির কারণে নগরবাসীর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল তারপরও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সীমিত সাধ্যের মধ্যে নগরবাসীর দূর্দশা লাঘবে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচী ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে যা এখনো অব্যাহত আছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পুরোপুরি সফলতার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করছি ডাস্টবিন ও কন্টেইনারের ময়লাগুলো দ্রুত অপসারন করার জন্য। এ জন্য নতুন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সফল করে তুলতে নগরবাসীর আন্তরিক সচেতনতা কামনা করেন এবং আবর্জনাসমূহ নালা, নর্দমা বা ড্রেনে না ফেলার আহবান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর যে কোন অভাব অভিযোগ জানাতে হট লাইন এবং মোবাইল এ্যাপস ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, নগরীর ২নং গেইট, প্রবর্ত্তক মোড়, বাদুরতলা, বাকলিয়া, পোর্ট কানেকটিং ও আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের জলাবদ্ধতা এবং সড়ক মেরামতের কাজ ধারাবহিকভাবে চলমান আছে। এ সময় তিনি মোবাইলে পোর্ট কানেকটিং রোডের নির্মাণ ঠিকাদারকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সড়কটি চলাচল উপযোগী করার নির্দেশ দেন। তাছাড়া তিনি হোল্ডিং ট্যাক্সের ব্যাপারে নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করে বলেন, সাধারণ জনগনের উপর যাতে কোনরূপ চাপ বা বোঝা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিম, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আব্দুল কাদের, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হাজী মোঃ ইলিয়াছ, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী হোসেন কোম্পানী, নিজাম উদ্দিন, হাজী ছালেহ জঙ্গী, মোঃ শাহজাহান, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, এ.এস.এম জাহিদ হোসেন, স্বরূপ দত্ত রাজু, সরওয়াদী এলিন, মোঃ বেলাল, হাসান মুরাদ, আরিফুর রহমান সোহাগ, মোঃ পারভেজ প্রমূখ।