॥ মনসুর আহম্মেদ ॥ পার্বত্য চট্টগ্রামে ঝড়ে পড়া ও অনগ্রসর জাতিগোষ্টীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৭ বছর আগে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার দুর্গম মগবান ইউনিয়নে তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুল নির্মাণ করা হলে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পুরো হাইস্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, কর্মচারী। স্কুলের এমপিও ভূক্তকরাসহ সকল সমস্যা নিরসনে বারবার যোগাযোগ করার পরে ও মিলছে না কোন সমাধান।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নে রন্যাছড়ি, হাজাছড়ি, ডুলুছড়ি, মধ্যপাড়া, সোনারাম পাড়া, আমছড়ি, অগৈয়াছড়ি এ ৭টি গ্রামের হাজারো মানুষের বসবাস। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩টি। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে মাধ্যমিক স্কুলে পড়তে হলে শহরে আসতে হয়, কিন্তু দারিদ্রপীড়িত পরিবারগুলোর শহরে ছেলে মেয়েদের রেখে পড়ানোর সামর্থ্য নেই। এসব শিক্ষার্থীদের একমাত্র শিক্ষা-বাতিঘর তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুল। প্রাথমিক স্তর শেষে একমাত্র হাইস্কুলে শিক্ষক না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারনে পিছিয়ে পড়ছে এখানকার শিশুরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় মগবান ইউপি সদস্য নিরোধ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের বারবার যোগাযোগের পরে ও স্কুলের সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছেনা। এজন্য শিক্ষা বিভাগের অসহযোগীতাকে দায়ী করছেন তিনি।
বিভিন্ন জটিলতার কারনে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা যায়নি বলে স্বীকার করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার রতন চাকমা। তিনি বলেন স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি সমাধানের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে বিদ্যালয়টি চালু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানালেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা। তিনি বলেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক নিয়োগসহ যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঝড়ে পড়া রোধে সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিহীন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে ২০১১সালে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলটি নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
২০১২ সালে স্কুলটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হলেও শিক্ষক সহ জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় থেমে যায় শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে ওই এলাকায় প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু।
প্রাথমিক স্তর শেষ করে পাহাড়ে দুর্গম ও দারিদ্রপীড়িত প্রত্যন্ত এই এলাকার শিক্ষার্থীদের একমাত্র বাতিঘর তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া মডেল হাই স্কুলটির শিক্ষক নিয়োগসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।