অবশেষে বিজিবি‘র বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর মামলা নিল পুলিশ

॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ অবশেষে নানা নাটকীয়তার পর খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় সহিংস ঘটনায় নিহত পরিবারের মামলা নিলো পুলিশ। ৪০ বিজিবি”র হাবিলদার ইছহাক আলী প্রধান আসামী করে ল্যান্স নায়েক মো আবু সাঈদ, নায়েক মো সুমন, সিপাহী মো রাব্বানী, সিপাহী মো সোহেল ও সিপাহী মো শাওনসহ ৬ জন আসামী করে বিজিবির গুলিতে নিহত মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. মানিক মিয়া।
পাল্টাপাল্টি অভিযোগর পর শুক্রবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে একই পরিবারের তিনজনসহ চার গ্রামবাসীকে হত্যার অভিযোগে বিজিবির বিরুদ্ধে মামলা নিল মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিজিবি গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুরো এলাকা পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়ে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় জনৈক চাঁন মিয়ার বাগানের কাঁঠাল গাছ কাটা ও পরিবহনকে কেন্দ্র করে বিজিবি সদস্য শাওন খান নিহতের ঘটনায় বিজিবি‘র মামলা দায়েরের কয়েক ঘন্টা পর এ ঘটনায় নিহত মফিজ মিয়ার ছেলে মো. মানিক মিয়া বিজিবি‘র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সাধারন মানুষ। এ ঘটনায় তারা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে।
এ ঘটনায় মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এমরান হোসেন বলেন, বিজিবি‘র মিথ্যা মামলার পর সাধারন মানুষ গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছে। মঙ্গলবারের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্ঠা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে গ্রামবাসীর মামলা গ্রহণ নিয়ে নানা ধরনের টানাপোড়েনের পর শুক্রবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে চার গ্রামবাসীকে হত্যা অভিযোগে
৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) হাবিলদার মো. ইসহাক আলীকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের নামোল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন বিজিবির গুলিতে নিহত মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. মানিক মিয়া।
মামলার এজাহারে কোন ধরনের উস্কানী ছাড়াই ঘটনার দিন মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মো. মফিজ মিয়াসহ অপরাপর ব্যাক্তিদের সামনে থেকে গুলি করার অভিযোগ আনা হয় বিজিবির হাবিলদার মো. ইসহাক আলীসহ অপরাপর অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় সাধারন মানুষকে গুলি করার সময় বাঁধা দেয়ায় বিজিবি সদস্য শাওন খানকে গুলি করে হত্যারও অভিযোগ করা হয় বিজিবি হাবিলদার মো. ইসহাক আলীর বিরুদ্ধে।
বিজিবির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামসুদ্দিন ভুইয়া বলেন, তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জনৈক চান মিয়ার বাগানের চার টুকরা কাঠাল গাছ পরিবহনকালে মাটিরাঙ্গার গাজিনগরে বিজিবি বাঁধা প্রদান করে। একসময় গাছগুলো বিজিবি নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বিজিবি এলোপাথারী গুলি করে। এসময় ঘটনাস্থলেও মারা যান সাহাব মিয়া প্রকাশ মুছা মিয়া ও তার ছেলে মো. আকবর আলী। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন খান, স্থানীয় আহাম্মদ আলী, মো. মফিজ মিয়া এবং মো. হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যান সাহাব মিয়ার আরেক ছেলে আহাম্মদ আলী ও বিজিবি সদস্য শাওন খান। এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আহাম্মদ আলীর শ্বশুর মো. মফিজ মিয়া। এ ঘটনায় গুরিবিদ্ধ মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. হানিফ মিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30