নগরীর টাইগারপাস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) অস্থায়ী কার্যালয় এলাকায় দেশের সর্ববহৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মাটির অনুকৃতি উন্মোচন করেন চসিক মেয়র আলহাজ¦ আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। আজ সোমবার দুপুরে এই ভাস্কর্য উন্মোচন হয়। মুজিববর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচিত ও স্মরণীয় করে রাখতে চসিকের এ উদ্যোগ। সিটি মেয়র আলহাজ¦ আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন এর দিক নির্দেশনায় চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম প্রায় ছয়মাস ধরে বঙ্গবন্ধু এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ কাজে চবির আরো ৮ জন শিল্পী তাঁকে সহযোগিতা করেন। চবি”র এই শিক্ষক নিজেই এ ভাস্কর্যটির নকশা প্রণয়ন করেন। এই ভাস্কর্য তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা এবং ভাস্কর্যের চার পাশে বেদী, সৌন্দর্যবর্ধন ও আনুসাঙ্গিক কাজের জন্য ব্যয় হবে ৪৭ লক্ষ ৭০হাজার টাকাসহ সর্বমোট ব্যয় হচ্ছে ৮৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। চসিক সূত্র জানা যায়, ইতোমধ্যে মাটি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এর মূলকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। টাইগারপাস চসিক এলাকায় উন্মোচনের পর সেটি নিয়ে যাওয়া হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (সাবেক পোট কানেকটিং রোড) রোড়ের বড়পুল চত্বরে। সেখানে স্থায়ীভাবে বসানো হবে এই ভাস্কর্যটি। এ ভাস্কর্যটি আকর্ষণীয় করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছে চসিক। বড়পুল এলাকায় নিয়ে গিয়ে ভাস্কর্যটি ছাঁচের মাধ্যমে ঢালাই দিয়ে স্থায়ী ভাস্কর্যে রূপান্তর করা হবে। বেইজসহ ভাস্কর্যটির উচ্চতা হবে ২৭ফুট ৬ ইঞ্চি। আর ভাস্কর্যটির উচ্চতা হবে সাড়ে ২২ ফুট। অবকাঠামো তৈরির কাজের সঙ্গে ভাস্কর্য চত্বরটি ফুলের গাছ, বিভিন্ন উদ্ভিদের সমন্বয়ে সজ্জিত করা হবে। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান নতুন প্রজম্মের নাগরিকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে স্থাপন করা হচ্ছে এ ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চসিক ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তারই প্রেক্ষাপটে এই ভাস্কর্য বসানো হচ্ছে। সিটি মেয়র বলেন মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এটি চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে উপহার দিতে চাই। বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কার্যের কাজ আগামী ১ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আরো বলেন, গত বছর চিকন গুনিয়া ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চসিকের সাফল্য রয়েছে। আমাদের সামনে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ আছে। চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তারই প্রেক্ষাপটে নগরীতে অনেক নালা-নর্দমা, খাল বন্ধ রয়েছে। ফলে ড্রেন নালা ভরাট হচ্ছে। এতে পানি জমে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে এ কথা অস্বীকার করা যায় না। এ ক্ষেত্রে চসিক তার ধারাবাহিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ ছাড়া মুজিববর্ষকে উপলক্ষ্য করে চসিক বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সিটি মেয়র বলেন, করোনা ভাইরাস এক ধরনের সংক্রামক ভাইরাস। আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, সচেতন হলে এ ভাইরাসের প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে সচেতন করতে চসিকের উদ্যোগে ১ লাখ লিফলেট নগরবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তারপরও চসিক সতর্ক রয়েছে। আমরা বীরের জাতি। সবার সহযোগিতায় ঐক্যবদ্ধভাবে সব সংকট মোকাবেলা করতে পারবো, ইনশাল্লাহ। এ সময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমেদ, চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, চবি চারু কলা বিভাগের সাবেক ডিরেক্টর ও আর্টিস্ট কনসালটেন্ট শায়লা শারমিন, নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ কর্পোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।