॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়লেও বান্দরবানে নেই আইসিইউ বেড আর পিসিআর ল্যাব আর এতে করে করোনা রোগীসহ সাধারণ জনগনকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। জেলার সদরসহ সাতটি উপজেলার হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকলেও চিকিৎসা সেবা নিতে যাচ্ছে না সচেতন নাগরিক ও সাধারণ মানুষ। শহরের প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতেও চিকিৎসকরা নিয়মিত বসছে না আর এতে করে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে। বলতে গেলে করোনা আতঙ্কে আছে সাধারণ মানুষ এর পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সরা। এদিকে করোনায় আতঙ্কে হাসপাতালগুলোতে সেবা নিতে যাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে আইসোলেশনে করোনা রোগী থাকায় অনেকে আতংকে সেবা নিতে যায় না, তবে সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা হাসপাতাল এলাকার বাইরে অন্যস্থানে করা উচিত ছিল। অনেক রোগী ও তাদের আত্বীয়রা জানান, হাসপাতাল এলাকার বাইরে অন্যস্থানে করোনা ইউনিট করা হলে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের মাঝে আর আতংক সৃষ্টি হতো না। বান্দরবানে পিসিআর ল্যাব এবং আইসিইউ স্থাপনের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও রোগ নির্ণয় করতে সরকারের কাছে ল্যাব স্থাপনের দাবি জানান। কারণ নমুনা পরিক্ষায় ভোগান্তীতে রয়েছে সাধারণ জনগন। জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ল্যাবে পাঠাতে হচ্ছে। ঐ নমুনার ফল মিলছে প্রায় ১সপ্তাহ পর। এদিকে বান্দরবানে হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে কোন আইসিইউ বেড না থাকায় করোনা রোগীদেরকে ভোগান্তী পোহাতে হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হচ্ছে জেলার বাহিরে চট্টগ্রাম অথবা ঢাকায়। জেলার সাতটি উপজেলায় ১শত ৩০শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে, তবে পিসিআর ল্যাব এবং আইসিইউ বেড জরুরী হয়ে পড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক। বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডা: মো: জসিম উদ্দিন বলেন, বান্দরবান সদর হাসপাতালসহ সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কোন আইসিইউ বেড নেই, তবে সদর হাসপাতালে ৮টি আইসিইউ বেড স্থাপনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ৫টি আইসিইউ বেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আতংকৃত হওয়ার কিছু নেই। ডাক্তার ও নার্স সবাই সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ডা: মো: জসিম উদ্দিন আরো বলেন, আমরা হেল্পলাইন নাম্বার চালু করেছি, ঐ নাম্বারের মাধ্যমে কেউ সেবা নিতে চাইলে নিতে পারবে। অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করে থাকেন আমি সেবা দিয়ে থাকি, যে কেউ ভিডিও কল এর মাধ্যমেও চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে, তাও প্রস্তুত রয়েছে আমাদের চিকিৎসকেরা। বান্দরবানের ডেপুটি সিভিল সার্র্জন ডা: মংটিং ঞো জানান, বর্তমানে বান্দরবান সদর হাসপাতালে কাগজে কলমে ডাক্তার আছেন ২১জন আর বর্তমানে কাজ করছে ১৬জন। অন্যদিকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সরকারিভাবে রয়েছে ১৩ বর্তমানে কাজ করছে ৬জন। থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সরকারিভাবে রয়েছে ১২জন বর্তমানে কাজ করছে ৭জন। আলীকদম উপজেলায় ১১জন এর বিপরীতে বর্তমানে আছে ৭জন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সরকারিভাবে রয়েছে ১২জন বর্তমানে আছে ৯জন। রোয়াংছড়িতে সরকারিভাবে রয়েছে ১৩জন বর্তমানে আছে ১০জন। বান্দরবান সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সরকারিভাবে রয়েছে ৮জন বর্তমানে কাজ করছে ৬জন। ডেপুটি সিভিল সার্র্জন ডা: মংটিং ঞো আরো জানান, বান্দরবানের রোগীদের সেবা দিতে স্বাস্থ্যবিভাগ কাজ করে যাচ্ছে, তবে জরুরী রোগি এবং মারাত্মক রোগীদের চিকিৎসার জন্য বান্দরবানে কোন আইসিইউ না থাকায় আমরা তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হই।