চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের জনদাবীর প্রতি সম্মান ও সমর্থন জানিয়ে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর দু’লেনের সড়ক সংযোগ এবং রেল সংযোগ নিয়ে কম্বাইন্ড সেতু নির্মাণ করা হবে। আগামী বছরের শুরুতে এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন আজ চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন কম্বাইন্ড সেতু নির্মাণের স্থান পরিদর্শন শেষে সেতুর বোয়ালখালী প্রান্তে আয়োজিত পথসভায় এ ঘোষণা দেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, সেতুটি আগেই নির্মাণ করা যেত। ভুল বোঝাবোঝির কারনে সেতু নিমাণে দেরি হয়েছে। এখন সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসন পাওয়া গেছে। ফলে সেতু নির্মাণে সকল মতভিন্নতা দুর হয়েছে। কোরিয়ান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ফান্ড (ইডিনিএফ) এর সাথে অর্থায়নে বিষয়ে আলোচনা চলছে। সব কিছু ঠিক করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সেতু নির্মাণের ডিজাইন চুড়ান্ত করা হয়েছে, স্থানও নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি রেল সংযোগ স্থাপনের জন্য এ সেতু অতীব জরুরী। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হয়ে যাবে। এজন্য ঐ সময়সীমার মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজও শেষ করা হবে। তিনি বলেন, রেল সংযোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার এ চার দেশের মধ্যে আন্ত:সড়ক সংযোগ সৃষ্টি করে এ সেতু যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উম্মোচন করবে।
বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী বক্তৃতা করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রণব কুমার ঘোষ, রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের জি এম, প্রধান প্রকৌশলী, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে নতুন সেতুর ডিজাইন নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জানানো হয়, বর্তমান সেতুটির ৮০ মিটার উত্তরে ৯টি থাম বা স্প্যান দিয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতুটিতে নৌযান চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চতা ও স্পেস রাখা হবে। ফলে জাহাজ চলাচলে সুবিধা হবে। সেতুটি নির্মিত হলে নিরবচ্ছিন্ন রেল পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা যাবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোরের অপারেশনাল প্রতিবন্ধকা দুর হবে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য বৃহত্তর করিডোর তৈরি হবে, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের যানজট হ্রাস পাবে, আঞ্চলিক বিনিময় সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান আরো উন্নত হবে।