মার্চ মাসে দেশে আত্মহত্যা করেছে ৫১ জন। এদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ৩৬ জন নারী ও ৩ জন শিশু। পারিবারিক দ্বন্দ্ব, প্রেমে ব্যর্থতা, অভিমান, রাগ ও যৌন হয়রানী, পরীক্ষায় খারাপ ফল, এমনকি পছন্দের পোষাক কিনতে না পারার কারনেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। ঢাকা বিভাগে আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশী। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার মনিটরিংয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চ মাসে দেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন হয়নি পারিবারিক ও সামাজিক নৃসংসতার বিষয়টি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যা উদ্বেগজনক। শিশু হত্যা, শিশু ধর্ষণ, গণ ধর্ষণ,পারিবারিক ও সামাজিক কোন্দলে আাহত ও নিহত, নারী নির্যাতন, রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলি ছিল উল্লেখযোগ্য এ মাসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ মাসে ক্রস ফায়ারে মৃত্যু হয় ২১ জনের, এর মধ্যে পুলিশের হাতে নিহত হয় ১৮ জন এবং র্যাব কর্তৃক নিহত ৩ জন। এ মাসে মোট ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৫ জন নারী ও শিশু । এদের মধ্যে শিশু ২২ জন। ১৬ জন নারী। ৭ জন নারী গণ ধর্ষণের শিকার হন । ধর্ষনের পর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয় বরিশালে।
মার্চ মাসে ৩০ শিশুকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে পিতা মাতা কর্তৃক খুন হয় ৪ শিশু। বরিশালে এনজিওর টাকা শোধ করতে না পারায় ৯ মাসের শিশুকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় মা। নারায়নগঞ্জে চুরির অপবাদ দিয়ে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়।
যৌতুকের কারনে মার্চ মাসে প্রাণ দিতে হয়েছে ৫জন নারীকে। নির্যাতনের শিকার হয় ৩ জন । সিলেটে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে পালিয়েছে পাষন্ড স্বামী। শরীয়তপুরে যৌতুকের দাবীতে নার্গিস আক্তার নামে এক গৃহবধুকে হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ীর লোকজন।
পারিবারিক কলহঃ পারিবারিক কলহে মার্চ মাসে নিহত হন ৩২ জন, এদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ,নারী ১৯ জন।। এদের মধ্যে স্বামীর হাতে নিহত হন ১৪ জন নারী। আর স্ত্রীর হাতে নিহত হন ৫ জন স্বামী । পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে দ্বন্ধ, রাগ, পরকীয়া সহ বিভিন্ন পারিবারিক কারনে এই সব মৃত্যু সংগঠিত হয় বলে জানা গেছে। খুলনায় পারিবারিক কলহের জেড়ে স্বামীর হাতে নিহত তাসলিমা খাতুন যিনি পেশায় একজন গৃহবধু।
সামাজিক অসন্তোষের শিকার হয়ে এই মাসে নিহত হয়েছেন ১৫ জন। আহত হয়েছেন ৫০৫ জন। সামাজিক সহিংসতায় আহত ও নিহতের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে । রাজধানীর খিলক্ষেতে চা পানকে কেন্দ্র করে যুবককে হত্যা করা হয়। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয় এক মুক্তিযোদ্ধা।
মার্চ মাসে দেশে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ১২০ জন। খাগড়াছড়িতে ইতি চাকমা নামে এক কলেজছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। মেহেরপুরে চাঁদা না পেয়ে দুই ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা করে র্দুবৃত্তরা ।
অন্যান্য সহিংসতার ঘটনা- মার্চ মাসে ১ জন এসিড নিক্ষেপের শিকার হয়। মাদকের প্রভাবে বিভিন্ন ভাবে নিহতের সংখ্যা ৫ জন, আহত হয় ১৫ জন। সড়ক দূর্ঘটনায় এ মাসে নিহত ১৯৪ও আহত ২৯৯ জন। তাছাড়া পানিতে ডুবে, অসাবধানবশত, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, বজ্রপাতে মৃত্যুবরণ করেছে ৯৬ জন। গণপিটুনিতে নিহত হয় ৮ ,আহত হয় ২ জন। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ১ জনের। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী দমন অভিযানের নামে গণগ্রেপ্তার করা হয় ৫০৭ জনকে।