চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ সড়কই পানিতে তলিয়ে গেছে

ফারদিন খান: চট্টগ্রাম ব্যুরো :: ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ সড়কই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের কোমর সমান পানির কারণে যান চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এসময় মানুষের যোগাযোগ ও হাটা চলা কষ্টকর হযে পড়ে। আবহাওয়া অফিস বলছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ দেশের নানা জায়গায় ভোর থেকে অল্প ও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। রোববার ৬ জুন, রোববার ভোর থেকেই চট্টগ্রামে বৃষ্টি শুরু হয়ে তা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। সকাল ৯টা থেকে বৃস্টি শুরু হয়ে তা থেমে থেমে এখনও অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিতে শহর জুড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। অনেক জায়গায় হাঁটু সমান কিংবা তারও বেশি পানিতে সয়লাব হয়ে যায় রাস্তাঘাট। অবিরাম বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, বহদ্দার হাট, বাদুরতলা, প্রবর্তক, শুলকবহর, কাতাল গঞ্জ, কাপাসগুলা ,হালিশহরসহ অনেক এলাকা ও অলিগলি রাস্তা যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে যারা কাজে বের হচ্ছে, তাদেরকে হাটু ও কোমর পরিমান পানি পেরিয়ে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে।
হামজারবাগ থেকে মেডিকেলে যাচ্ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা। তিনি জানান, মুরাদপুরসহ আসার পথে প্রায় সর্বত্র রাস্তা পানিতে ডুবে ছিলো। মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত খুবই খারাপ অবস্থা। অনেক গাড়ী নষ্ট হয়ে রাস্তায় আটকে ছিল। পানিতে রাস্তা ডুবে ছিল। সব মিলিয়ে আজ একেবারে বাজে অবস্থা হয়েছে।এদিকে নগরীর অনেক জায়গায় প্রচণ্ড জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।
নগরীর সরাইপাড়া থেকে মো.ফারুক নামে চাকরিজীবী বলেন, অফিসে যেতে রেইনকোট পড়ে নিচে নামতেই দেখি পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। নিচতলার অর্ধেক উচ্চতা পর্যন্ত পানি। সেখানে আমার বাইকও ডুবে আছে। শেষ পর্যন্ত অফিসে আর যাওয়া হলো না। অন্যদিকে সকালের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার ছবিতে সয়লাব হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কেউ কেউ পথে বেরিয়ে জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করেছেন।
সকালে ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, টেকনাফসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিরভাগ স্থানে প্রবল বজ্রপাতসহ ভারি থেকে অতিভারী বর্ষণ চলছে!
ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কার কথাও বলা হয় বুলেটিনে। এসময় বজ্রপাত থেকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে আরো ঘন্টাখানেক এমন বর্ষণ চলমান থাকতে পারে! এছাড়া আগামি ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায় প্রাক বর্ষার এমন ভারি বর্ষণ বিরতিসহ অব্যাহত থাকতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলে!
এতে করে রোববার (৬ জুন) চট্টগ্রামের অফিসগামী ও সাধারণ পথচারীদের পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, শুলকবহর, প্রবর্তক মোড়, কাতালগঞ্জ, কাপাসঘোলাসহ বিভিন্নস্থানের কোথাও হাঁটু পরিমাণ আবার কোথাও কোমর পরিমাণ পানিতে সড়ক ডুবে গেছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে যারা কাজে বের হচ্ছে, তাদেরকে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রাক মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে তা থেমে থেমে হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।
এদিকে চাক্তাই খাল ও হিজড়া খাল পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়ায় বৃষ্টির পানি আশপাশের ঘর-বাড়িতে উঠে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র অধীনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান প্রকল্পের অধীনে নগরের বিভিন্ন খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, যা এখন জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930