জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আ. স. ম. আব্দুর রবের অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা।

অনেকে তাকে ডিগবাজির রাজনীতির পুরোধা বলেও অভিহিত করছেন। বিভিন্ন সময়ে সুবিধা আদায় করতে একের অধিক দল পাল্টিয়েছেন তিনি। এমনকি রাজনীতিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন দল থেকে সুবিধা আদায়েও পটু হিসেবে পরিচিত আব্দুর রব। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীত দুর্নীতি ও অপকর্ম ঢাকতে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিকের মুখোশ ধারণ করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণের পাঁয়তারা করছেন রব। নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে রবের উপস্থিতিকে ময়লা পানির সঙ্গে তুলনা করছে। তারা বলছে, ময়লা ধুতে পরিষ্কার পানির প্রয়োজন হয়, ময়লা পানি দিয়ে ময়লা ধোয়া যায় না।

আ. স. ম আব্দুর রবের রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর আ. স. ম. আব্দুর রব বঙ্গবন্ধুর সাথে বেইমানি করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নতুন দল জাসদ গঠন করেন।

এদিকে আ. স. ম. আব্দুর রবই বাংলাদেশের প্রথম গৃহপালিত দলের নেতা হিসেবে স্বীকৃত। গণতন্ত্রের কথা বললেও স্বৈরাচারী সরকার এরশাদের অধীনে ১৯৮৮ সালে সব দল নির্বাচন বর্জন করলেও রব একাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এরশাদ সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সুবিধা আদায় করেছিলেন। ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধীদলের নেতা হওয়ায় সে সময় জাতীয় শহীদ মিনারে রব নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। ৯০ এ যখন স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতন হলো, তখন শুধু সরকারি দলের সদস্যরাই পালায়নি, জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে পালিয়েছিলেন রব নিজেও।

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন রব। তৎকালীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রবের বিরুদ্ধে উঠেছিল দুর্নীতি ও ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ। কিছু অভিযোগও ছিল চরম হাস্যকর। অভিযোগ ছিল, চিড়িয়াখানায় বাঘদের বরাদ্দকৃত মাংস দুর্নীতি করে বাসায় নিয়ে খেতেন রব। পশুকে যিনি ছাড় দেননা তার পক্ষে মানুষের উপকার করা কতটা সম্ভব সেটি উপলব্ধির বিষয়। এছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রদর্শনের জন্য বিদেশ থেকে দুর্লভ প্রাণী আমদানির নামে সরকারের লাখ লাখ টাকা তছরুপ করেন রব।

এ প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘চেয়ারের প্রলোভনে পড়ে দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী রব নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে গণতন্ত্র, সুশাসন, ক্ষমতার বণ্টন নিয়ে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন সেগুলো জনগণের সাথে প্রতারণা মাত্র। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রত্যেক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দল পাল্টানো এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। গায়ের ময়লা ধুতে পরিষ্কার পানির প্রয়োজন হয়। ময়লা পানি দিয়ে ময়লা দূর করা যায় না। ’

যাদের গায়ে দুর্নীতির দুর্গন্ধ আছে তারা কোন মুখে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করার কথা বলেন সেটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়। ফলে দুর্নীতিবাজ ও ডিগবাজিতে অভ্যস্ত নেতাদের চিনে রেখে তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান সাকি।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031