জলাবদ্ধতার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এককভাবে দায়ী নয়

টানা কয়েক ঘন্টার টানা প্রবল বর্ষণে নগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা নজীর বিহীন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। নগরীর নিম্নাঞ্চল বিশেষতঃ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-চকবাজার-মুরাদপুর-বহদ্দারহাট-চান্দগাঁও-আগ্রাবাদ এক্সেস রোড ও সিডিএ আবাসিক এলাকায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দোকান-পাট ও গুদামঘর কোমড়পানিতে ডুবে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের সর্বনাশ ঘটেছে। এছাড়া জোয়ারের কারণে পানি দীর্ঘক্ষণ স্থিতিশীল থাকায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। যদিও আপাত দৃষ্টিতে এই অবস্থার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকেই মূলতঃ দায়ী করা হয়। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম বলেন, এই সমস্যাটি তিন যুগ ধরে চলমান। অতীতের ও বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে কোন সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা না থাকায় এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। পরিকল্পিত নগরায়ন না হওয়ায় যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণের ফলে নগরীর পানি নিষ্কায়নের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। চাক্তাইখাল সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ খালের জায়গায় প্রভাবশালীদের স্থাপনা নির্মাণ পরিস্থিতিকে আরো বেশি ভয়াবহ করে তুলেছে। আরো লক্ষ্যনীয় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ী ডলের সাথে সমতল ভূমি কাঁদা-বালিতে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় খাল, নালা, নর্দমা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী ও খাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ভয়াবহ ভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ক্ষুন্ন হচ্ছে। দুষিত শিল্প বর্জ্যে কর্ণফুলী, হালদা সহ চট্টগ্রামের প্রধান প্রধান নদীগুলো দূষণের শিকার হয়ে মৎস্য প্রজনন শূন্য হয়ে যাচ্ছে। সর্বোপরি চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের কোন মহাপরিকল্পনা নেই। নেই যুগেযাপযোগী কোন নগরায়ন পরিকল্পনা। বন্দরের কর্ণফুলী নদী ড্রেজিং প্রকল্প নানা কারণে মুখ থুবড়ে পড়ায় কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে। তাই সঙ্গহত কারণেই বলা যায় চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার জন্য শুধুমাত্র চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কিংবা মেয়রকে এককভাবে দায়ী করা যায় না। চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও সার্বিক সমস্যা সমাধানের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বন্দর, সিডিএ, রেলওয়ে, ওয়াসা, গণপূর্ত, সড়ক জনপদ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ২৭টি সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বাশিত সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগ ও ভূমিকা এখনই প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সমালোচনা ও পারস্পরিক দোষারোপ নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গের নামান্তর। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা। এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে পারস্পরিক দোষারোপ আত্মঘাতি পরিনাম বয়ে আনবে।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031