শুক্রবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশের মাজার ই শরীফ শহরে হামলাটি চালানো হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আফগানিস্তানের কোনো সেনা স্থাপনায় চালানো সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা এটি।
ঘটনাস্থল থেকে দেশটির এক কর্মকর্তা শনিবার জানিয়েছেন, অন্তত ১৪০ জন সৈন্য নিহত ও বহু আহত হয়েছে।
নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সরকারিভাবে এখনও হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব কথা জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তারা।
ওয়াশিংটন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জন থমাস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে শুক্রবারের হামলাটিকে ‘উল্লেখযোগ্য’ হামলা উল্লেখ করে এতে সম্ভবত ৫০ জনের বেশি হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন।
ঘাঁটিটির একটি মসজিদ ও একটি ডাইনিং এলাকাকে কেন্দ্র করে হামলাটি পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে তালেবান হামলার দায় স্বীকার করেছে।
মাজার ই শরীফে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চলার সময় আফগান জাতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যরা সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে; ২১ এপ্রিল, ২০১৭। রয়টার্স
আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ জনের মতো তালেবান যোদ্ধার একটি দল আফগান সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে সামরিক যান চালিয়ে ঘাঁটিতে প্রবেশ করে, তারা দুপুরের আহার গ্রহণরত ও জুমার নামাজ শেষে একটি মসজিদ থেকে বের হওয়া সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।
এ সময় হামলাকারীরা রকেট চালিত গ্রেনেড ও রাইফেল ব্যবহার করে বলে জানিয়েছেন তারা।
শনিবার এক বিবৃতিতে তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, সম্প্রতি উত্তর আফগানিস্তানে তালেবানের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে।
নেটোর নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট মাজার ই শরীফের এই ঘাঁটিটিতে আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করার জন্য বেশ কিছু সামরিক উপদেষ্টা মোতায়েন করেছে। তাদের কেউ এ হামলায় হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ওই সামরিক জোটটির কর্মকর্তারা।
এ হামলায় আটজন নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছিল, পরে নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে খবর হয়।
সেনাবাহিনীর এক কমান্ডার জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন হামলাকারীর মধ্যে অন্তত একজন আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। শুক্রবার রাতেও ঘাঁটিটিতে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাজার ই শরীফের এই ঘাঁটিটি আফগান ন্যাশনাল আর্মির ২০৯তম কর্পসের ঠিকানা। উত্তর আফগানিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চলের নিরাপত্তার বিধানের দায়িত্ব এই ঘাঁটিটির ওপর ন্যস্ত। এসব অঞ্চলের মধ্যে কুন্দুজ প্রদেশও আছে যেখানে সম্প্রতি তীব্র লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
ঘাঁটিটিতে বেশ কিছু জার্মান ও অন্যান্য বিদেশি সৈন্য ছিল বলে জানা গেছে।
গত মাসে দেশটির রাজধানী কাবুলের একটি সামরিক হাসপাতালে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হামলায় প্রায় ৫০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিল। ওই একই মাসে তালেবান দাবি করেছিল, তারা বছরব্যাপী দীর্ঘ এক লড়াইয়ের পর দক্ষিণাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ আফগান জেলা সানগিন দখল করে নিয়েছে।