টেকনাফে বৃষ্টিতে বেড়েছে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা

॥ টেকনাফ সংবাদদাতা ॥ টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বসতিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। টেকনাফ ও উখিয়ায় অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে ঘর তৈরি ও টানা বৃষ্টির ফলে ধসের আশঙ্কাও করছেন অনেকে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, পাহাড় ধসের মতো ঘটনা ঘটলে তা সামলানোর প্রস্তুতি নেই।
বৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গাদের বসতি উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থ্যাংখালী, পালংখালী ও টেকনাফের উনছিপ্রাং এলাকায় কমপক্ষে অর্ধশত ছোট-বড় পাহাড় কেটে তাতে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা। সারি সারি ঘর করতে তারা পাহাড়ের ধসে পড়ার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এভাবে ঘর তৈরি পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি, বলেও মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কক্সবাজারের স্টেশন ম্যানেজার সাফায়েত হোসেন বলেন, পাহাড় যেগুলো কেটেছে সেগুলো এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। তার উপর সেগুলো কাটা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। বৃষ্টিতে এই ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়েছে। এতে ধস হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে। যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের কোনও প্রস্তুতি বা পাহাড় কাটার বিষয়ে কোনও নির্দেশনা সদর দফতর থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এই ধরনের কোনও নির্দেশনা এখনও দেওয়া হয়নি। তবে আমাদের জেলা প্রশাসক কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো আমাদের অপারেশন টিম ফলো করছে।
তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, যেকোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ধস হলে আরও বড় দুর্যোগ দেখা দিবে। তবে আমরা প্রস্তুতি রয়েছি। এতো মানুষকে একই সঙ্গে বুঝিয়ে-শুনিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা কঠিন। তারপরও আমাদের জেলা প্রশাসন ও সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলো চেষ্টা করছে।
বালাখালী ও উনছিপ্রাং এলাকায় কয়েকটি উঁচু পাহাড়ে রোহিঙ্গারা ঝুঁকিপূর্ণ ঘর তৈরি করেছে। কোনও পাহাড়ে একটুও ফাঁকা জায়গা নেই। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সাফায়েত হোসেন বলেন, এই পাহাড়গুলো এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ, তার উপর এই বৃষ্টিতে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হলো। যারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে, আমরা তাদের জন্য চিন্তিত।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস এ সপ্তাহের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী তিনদিন মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার বৃষ্টি কমতে পারে। তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হবে।
এদিকে, সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও দ্বিগুণ হয়েছে। পাহাড়ের ঢালে যারা ঘর তৈরি করেছেন বৃষ্টিতে তাদের অনেকের ঘর তলিয়ে গেছে। তারা রাস্তায় এসে আশ্রয় নিয়েছে। কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ জানান, তাদের আশ্রয়স্থল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা সোমবার বিকাল থেকেই রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31