বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি :: সরিষা ক্ষেতে সুন্দর্য ভরে উঠেছে দৌছড়ির পাহাড়ীঞ্চল

॥ শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥ সরিষা ক্ষেতে সুন্দর্য ভরে উঠেছে পাহাড়ীঞ্চল। সরিষার মহু-মহু গন্ধের সুভাস ছড়িয়েছে গেছে গোটা পাহাড়ীঞ্চল। সেই গন্ধের টানে ছুটে আসছে মৌমাছিরা। আবার অনেকে সরিষা ক্ষেতের বর্ণিল দৃশ্য ক্যামেরা বন্ধি করে রাখছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দৌছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ীঞ্চলে সরিষা ক্ষেতের প্রদর্শনীর বাহারি দৃশ্য যেন নজর কাড়ার মত। দৌছড়ি পাহাড়ঞ্চল ঘুরে ফিরে দেখা গেছে খন্ড খন্ড পাহাড়ে সবুজের সমারহ আর নিছে চাষে জমি গুলোতে চাষিরা সরিষা ক্ষেতের প্রদর্শনী নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে ।
দৌছড়ির বিভিন্ন পাহাড়ঞ্চলে এখন সরিষা ক্ষেতসহ নানা জাতের শাকসবজি, আলু, বেগুন, মরিচ, ছিটা পিঁয়াজ, আদা, রসুন, সিম, ধনেপাতা, গাঁজর, কফি, মুলা, লাউ, গম, তিল, তিশি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতের ধান চাষ করা হচ্ছে। কথা হয় দৌছড়ি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মুজিবুর রহমানের সাথে, তিনি বলেন এই পাহাড়ীঞ্চলে বাপ-দাদার আমলে শুনেছি সরিষা ক্ষেতের কথা। তবে নিজের এলাকায় কোন দিন সরিষা ক্ষেত চোখে পড়েনি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শিমুল কান্তি শীলের উদ্ভোদ্ধ ও সহযোগিতায় এলাকার বেশ কয়েকজনকে প্রদশর্শনীর মাধ্যমে পুনরায় সরিষা চাষা শুরু করেছে।
কৃষানি ও মহিলা মেম্বার জায়তুন নাহার বলেন, প্রথমবারের মতো এ বছর ৫০/৬০ শতক জমিতে সরিষা, ৪০ শতক জমিতে ভুট্টা এবং ৪০ শতক জমিতে সবজি চাষ করেছি। তিনি আশাবাদি চলতি মৌসুমে তিনি সব মিলে ৮০ হতে ১লাখ টাকা লাভ করার আশাবদী। দৌছড়ি বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী কাজল জানান, দৌছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ীঞ্চলের সবজি এবং তরিতরকারির দাম তুলনামুলকভাবে অন্যান্য আবাদের চেয়ে অনেক কম। যার কারণে স্থানীয়ভাবে মাল ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করলে দ্বিগুন লাভ পাওয়া যায়। তিনি বলেন স্থানীয় তরিতরকারির চাহিদা অনেক বেশি। তবে পাহাড়ীঞ্চল থেকে মালামাল নিয়ে আসতে পরিশ্রম বেশি হয়।
দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হাবীব উল্লাহ জানান, পাহাড়ীঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ, বাজারজাত করণ এবং প্রক্রিয়াজাত করণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা মুনাফা অর্জন করতে পারছে না। তিনি মনে করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে যেসব ফসল উৎপাদন হয় তাতে করে উপজেলা সদরে ২ হতে ৩টি হিমাগার প্রয়োজন। অথচ হিমাগার স্থাপন হয়নি এই উপজেলা। তাছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন থাকায় পাহাড়ীঞ্চল হতে চাষিরা উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারে নিতে পারছে না।
উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি অফিসার শিমুল কান্তি শীল জানান, দৌছড়ির পাহাড়ীঞ্চল এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ীঞ্চলের বর্ষার মৌসুমে পাহাড় থেকে বৃষ্টির পানির সাথে মাটি জমে থাকার কারণে অনেক উর্বর। সে কারণে রাসায়নিক সার ছাড়াই বিভিন্ন ফসলের ফলন ভাল হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জমিতে সরিষা চাষ ভালো ফলন হচ্ছে। যার সিংহ ভাগই পাহাড়ে নিছে ঘোনায় এবং পাহাড়ের খোজাঁয় চাষ হয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ীঞ্চলের খালের চরসহ চাষের জমিতে সরিষা, ভুট্টা, গম, আলু, মরিচ, পিয়াচ, রসুন, তিল, তিশিসহ শাকসবজি এবং নানা জাতের ধান চাষ বেশি হচ্ছে। কৃষকরা নানাবিধ ফসল চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে দিনের পর দিন।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম একেএম মকছুদ আহমেদের স্বরণে নাগরিক শোকসভা :  পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি প্রবীন সাংবাদিককে মরনোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভুষিত করার দাবী

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031