পিসি রোড পরিদর্শকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সুজন : ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ চাই

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ‘চট্টগ্রামের দুঃখ’ বলে খ্যাত পোর্ট কানেকটিং রোড (পিসি রোড) এর ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করতে ঠিকাদারদের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হবে বলে তিনি ঘোষণা করেন। আর তাই সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ না করলে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভূক্ত ও গণদুশমন হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের তালিকা নগরবসাীর সামনে প্রকাশ করা হবে। তিনি আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় পোর্ট কানেকটিং রোডের চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে একথা বলেন। এসময় মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, জাইকার সিনিয়র প্রকৌশলী নাছির উদ্দিনসহ স্থানীয় জনগণ প্রশাসকের সাথে ছিলেন।
প্রশাসক প্রথমে পাহাড়তলী সাগরিকা রোড পোর্ট কাস্টমস একাডেমি এলাকায় প্রায় ১২০ ফিট দৈর্ঘ্যের কালভার্টের চলমান নির্মাণ কাজ প্রত্যক্ষ করেন। জাইকা ও সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে এই পিসি রোডের উন্নয়ন কাজ চলছে। তিন লটে ভাগ হওয়া এই পুরো পিসি রোডের উন্নয় কাজ করছে রানা বিল্ডার্স ও তাহের এন্ড ব্রাদার্স। প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন তাহের এন্ড ব্রাদার্সের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ ও রানা বিল্ডার্স এর কাজের ধীর গতিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। যে তিন লটে চলমান উন্নয় কাজ চলছে সেই স্থানগুলো হলো নীমতলা হতে তাসফিয়া মোড়, তাসফিয়া মোড় হতে কলকা মোড়, কলকা হতে সাগরিকা। জাইকার সূত্রে জানা যায়, এই পুরা পিসি ােডের উন্নয়ণ কাজে মোট ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বৃষ্টি না হলে নভেম্বরের মধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হবে বলে প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন আশা প্রকাশ করেন।
পরিদর্শন কালে প্রশাসক সড়কটির বিভিন্ন স্পটে হেটে উন্নয়ন কাজ, বর্তমান অবস্থা প্রত্যক্ষ্য করেন ও জনগণের সাথে কথা বলেন। এই সময় নয়াবাজার বিশ্বরোড এলাকার স্থানীয় দুই বাসিন্দা মনজুরুল আলম ও মো. ইলিয়াছ দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ সড়কটি ভাঙা থাকায় তাদের দুর্গতির কথা প্রশাসককে জানালে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই সড়কের কাজ একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে করলেও অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে ঢিমেতালে। তাকে সতর্ক করছি। এখন কথা না শুনলে নগরবাসীকে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন, নগরীর ৬০ লাখ অধীবাসীর দৃষ্টি এই পিসি রোডের দিকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে আমি সবধরনের সহযোগীতা করতে প্রস্তুুত। তিনি ঠিকাদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাকে জনগণের কাঠ গড়ায় দাড় করাবেন না। পরিদর্শনকালে সড়কের বেশ কিছু স্থানে গর্ত থাকায় তা মেকাডাম দিয়ে ভরাট করে গাড়ি চলালের উপযোগী ও ধুলা উড়তে দেখে পানি ছিটাতে ঠিকাদারের লোকজনদের নির্দেশ দেন প্রশাসক। তখন সড়কে সড়কে বেশ কিছু চলমান কন্টেইনারবাহী লরী থামিয়ে চালকদের কাছে কন্টেইনার ও গাড়ির ওজন কত জানতে চান?
প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সাময়িক দায়িত্ব পেয়েও আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি নগরীকে পরিচ্ছন্ন ও মানবিক শহরে পরিণত করতে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, রেলওয়ে, ইপিজেড, বিজিএমইএ, বেসরকারি রি-রোলিং স্টিল মিলসহ যারা ব্যবসার প্রয়োজনে আমাদের এই বন্দর নগরীর সড়কগুলো ব্যবহার করছেন তাদের কাছে আমি ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ চেয়েছি। যাতে নগরীর সড়কগুলো টেকসই করে নির্মাণ করতে পারি। কর্পোরেশন বেসরকারি খাতে নগরবাসীর ওপর করের বোঝা চাপাতে চায় না। সরকারি প্রতিষ্ঠান যারা নগরীর সুবিধা ভোগী তারা ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিলে নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। প্রশাসক নগরীর ৬০ লাখ অধীবাসীকে সার্ভিস চার্জের বিষয়ে তার সাথে আওয়াজ তুলতে বলেন।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031