প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারকে অস্তিত্ব বিপন্নের পথে: রিজভী

জনগণকেঅন্ধকারে রেখেএই সমঝোতা স্মারক হয়েছে দাবি করে তিনি বলছেন, বাংলাদেশেজোর করেক্ষমতায় যারা আছেন, তাদের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে

নয় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হায়দ্রাবাদ হাউজে শনিবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে ২২টি চুক্তি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরমধ্যে প্রতিরক্ষা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে

এগুলো হলো– ‘বাংলাদেশ ভারত সরকারের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রূপরেখাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, ‘কৌশলগত ব্যবহারিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতেঢাকার মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ভারতের তামিলনাডু রাজ্যের ওয়েলিংটনে (নিলগিরি) ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক এবংজাতীয় নিরাপত্তা, উন্নয়ন কৌশলগত শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতেঢাকার ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ নয়া দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক

এগুলোর মধ্য দিয়ে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেউন্মুক্তকরে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী

তিনি বলেন, “আমাদের সবচাইতে অহঙ্কারের যে জায়গা, আমাদের স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব রক্ষার যে বিষয়টিসেটি হচ্ছে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্মোচন করে দেওয়া হলো ভারতের কাছে।

আমাদের নিরাপত্তা, আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করার মতো একটি জায়গায় উপনীত হলো এই প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারকে সই করে।

বাংলাদেশের জনগণ এই সমঝোতা স্মারকের বিপক্ষে দাবি করে রিজভী বলছেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে জনমতকে তাচ্ছিল্য করে এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা হল। আমরা মনে করি, এটি দেশ জনগণের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা এর প্রতিবাদ নিন্দা জানাচ্ছি।

এই সমঝোতা স্মারক যে দেশের স্বার্থে নয় সে দাবির পক্ষের যুক্তি দিয়ে রিজভী বলছেন, “প্রতিরক্ষার মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জনগণকে অন্ধকারে রেখে এটা করেছে। তাহলে নিশ্চয়ই জনস্বার্থে করা হয়নি, দেশের স্বার্থে করা হয়নি। জনস্বার্থে করলে আগেই বিষয়টা জনগণকে জানাতেন। জোর করে যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের স্বার্থেই এই স্মারকে সই করেছেন।

তিনি বলেন, “নিরাপত্তা বা প্রতিরক্ষা এটি একেবারে নিজস্ব ব্যাপার। এটাকে আমরা কীভাবে আধুনিকায়ন করব, এটাকে কীভাবে আরও বেশি শক্তিশালী করব, বিশ্বের সাথে কমপিট করার জন্য গড়ে তুলবএটা একেবারে আমাদের দেশের পলিসিমেকারদের ব্যাপার।

ভারত বাংলাদেশের জনগণকেকোনো মর্যাদা দেয় না’, তারা শুধু একটি রাজনৈতিক দলকে (আওয়ামী লীগ) ‘রক্ষা করতেচায় বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রিজভী

প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে ভারতের ৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের ঢাকা সফরের কথা বলেন তিনি। বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং চুক্তি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর হায়দ্রাবাদ হাউজে সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালকের এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাসি নিয়ে রিজভী বলেন, “আমরা গণমাধ্যমে এও দেখেছি, সঞ্চালকের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রীর হাসি আর থামছে না। কারণ তিনি এমন একটি কাজ করেছেন, গোটা জাতি যখন স্তব্ধ, গোটা জাতি নির্বাক স্বীয় স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব যখন বিপন্ন হওয়ার পথে, তিনি তখন তার সহযোগীদের সন্তুষ্ট করাতে এই হাসি হাসছেন

কিন্তু বাংলাদেশের হৃদয়ে যে কান্না ঝরে পড়ছে, সেটি তিনি উপলব্ধি করতে পারছে না।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই হাসি ছিল ঘোষকের ভুল ইংরেজির কারণে। হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নরেন্দ্র মোদী এবং হল ভর্তি সাংবাদিকরাও বিষয়টি নিয়ে হাসিতে ফেটে পড়েন।

হায়দ্রাবাদ হাউজে একান্ত বৈঠকের পর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন হাসিনা মোদী। এরপর তারা দোতলায় বলরুমে আসেন এবং মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ান। তখন চুক্তি সমঝোতাপত্র বিনিময় হচ্ছিল।

চারটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর ঘোষক বলেন– “may I request two Prime Ministers to step down.”

ইংরেজি এই বাক্যটির মানে দাঁড়ায়আমি দুই প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছাড়ার অনুরোধ করছি

নিয়ে ব্যাপক হাস্যরসের পর ভুল শুধরে ঘোষক বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন করতে তিনি দুই প্রধানমন্ত্রীকে মঞ্চ থেকে নামার অনুরোধ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী এই সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে দোষারোপ করে রিজভী বলেন, “তিস্তা চুক্তি এদেশের মানুষের জীবনমরণের প্রশ্ন। যেটা জীবনমরণের প্রশ্ন, সেটা নিয়ে তো বাংলাদেশের সরকারের কোনো সংগ্রাম নেই। এটা নিয়ে তো তারা করবেন না। কারণ এটা নিয়ে যদি দর কষাকষি করেন, তাহলে তার বন্ধুরা বিরক্ত হবেন, অসন্তুষ্ট হবেনএই কারণে তারা এই চুক্তি করছেন না।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা হারুনুর রশীদ, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন

মুক্ত গণমাধ্যম চাই : সকল গণমাধ্যমে এক নীতিমালা, তথাকথিত ওয়েজ বোর্ড বাতিল, নিজস্ব বেতন বোর্ড, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত, প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য কমানো ও মফস্বলের পত্রিকাগুলো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে টিকিয়ে রাখতে হবে

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031