॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥ কাপ্তাই উপজেলায় শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সকালে প্রচন্ড বেগে কাল বৈশাখীর ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের সাথে ছিল প্রবল বেগে দমকা হাওয়া। সেই সাথে সারা দিন কখনো ভারী কখনো হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হয়। সারাদিন আকাশ ছিল মেঘলা। থেমে থেমে আকাশে মেঘের গর্জন ছিল পিলে চমকাবারমত।
কাল বৈশাখীর ঝড়ে পাহাড়ে জুম চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। জুম চাষী উথোয়াই মং মারমা জানান বিগত কয়েকদিন ধরে তারা পাহাড়ের জঙ্গল পরিষ্কার করে একস্থানে জড় করে রেখেছিলেন। এই জঙ্গল পুড়িয়ে জুম চাষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সবাই। কিন্তু হঠাৎ ভারী বৃষ্টি তাদের সকল প্রস্তুতি নষ্ট করে দিয়েছে। এখন সহজে আর জুম চাষ করা সম্ভব হবেনা বলে তিনি জানান। আবার শ্রমিক নিয়োগ করে জুম চাষের প্রস্তুতি নিতে তাদের বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে। এই বাড়তি খরচ যোগাড় করা তাদের পক্ষে কঠিন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ঝড়ের কবলে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে জানা গেছে। চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কেপিএম স্কুলের পেছনে আনু বেগম নামের এক নারী জানান ঝড়ে তার ঘরের চাল উড়ে যায়। বরইছড়ি, শীলছড়ি, চিৎমরম, কাপ্তাই নতুন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ও কর্ণফুলী নদীর তীরে বসবাসকারি বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘর কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং অনেক বড় গাছের ডাল পালাও ভেঙ্গে রাস্তার উপর পড়ে। চন্দ্রঘোনা শিল্প এলাকায় অনেকক্ষণ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। উপজেলার অনেক স্থানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মং সুই প্রু মারমা বলেন এই বৃষ্টিতে গ্রীষ্মকালিন শাকসবজীর কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পুইশাক, ডাটা শাক, পাট শাক, চিচিংগা, বরবটি, ভেন্ডি ইত্যাদি ফসলের ক্ষতি হয়। পাশাপাশি বোরো ধানেরও ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন খেতে বোরো ধানে পাক ধরেছে। ধান কাটার জন্য প্রস্তুত ছিল চাষী। কিন্তু হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি ও তুফানের ফলে কৃষক অনাকাঙ্খিত ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হলো।