রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বৈষম্য ও সন্ত্রাস বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসমাবেশ সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ের বাঙালিদের সাথে বৈষম্য দূর করে সশস্ত্র সংঘাত, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ের বাঙালিদের সাথে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যা অনুপাতে বন্টনসহ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি মুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন ও রাষ্ট্র বিরোধী দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাঙ্গামাটিতে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার (২৮ আগষ্ট) সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা চত্বর থেকে হাজারো ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিমনেশিয়াম মাঠে গিয়ে মহাসমাবেশে মিলিত হয়। রাঙ্গামাটি বিভিন্ন উপজেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন দাবীর প্লেকার্ড, ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে যোগদান করে। মহাসমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আসিফ ইকবাল ও সাধারণ সম্পাদক মো: হাবীব আজমের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মো: সোলায়মান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি সুমন আহম্মেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবু আইয়ুব আনসারী, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি গিয়াস উদ্দিন। সমাবেশে সচেতন রাঙ্গামাটিবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, মো: কামাল উদ্দিন, মো: নুরুজ্জামান, মো: নাছির উদ্দিন।
মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে কাজী মজিবর রহমান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সকল উপজাতি সম্প্রদায় প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমার ও চীন থেকে অষ্টদশ (১৭২৭-১৭৩০) শতকের দিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বসবাস শুরু করে; যা স্মরণাতীত কাল পূর্বে ঘটেনি। তারা মাত্র কয়েকশ বছর পূর্বে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী অভিবাসী। অথচ আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয় এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মায়ানমার ও চীন হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসী হিসেবে এসে বসতিস্থাপন করলে ভূমি সন্তান হওয়া যায় না। মূলত আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মলেন্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় উপজাতীয় ও দেশীয় কুচক্রী মহল। এইসব কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
কাজী মজিবর রহমান আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় সর্বোচ্চ পদে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হতে পদায়ন করা হয়ে আসছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সভাপতির পদসহ সকল সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পদসমূহ শুধুমাত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত। উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদটি পাহাড়ি-বাঙালি উভয়ের জন্য নির্ধারিত থাকলেও এই পদেও সবসময় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হতে পদায়ন করা হয়ে আসছে। সমতা ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে চলতি টার্মে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে আজকের সমাবেশ থেকে একজন বাঙালি নিয়োগ দেয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আপামর বাঙালি জনগন জোরদাবি জানাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল সম্প্রদায় হতে জেলা পরিষদে সদস্য নির্বাচিত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫১ শতাংশ বাঙালি জনসংখ্যা হিসেবে পার্বত্য জেলা পরিষদে নূন্যতম ৫০ শতাংশ সদস্য বাঙালি জনগোষ্ঠী হতে নিয়োগ করতে হবে।
মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্য মূলক ও বিশেষ উদ্দেশ্য প্রনোদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন এবং অসহায় ও ভূমিহীনদের মাঝে ভূমি বন্দোবস্তি চালু করতে হবে। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ের বাঙালিদের সাথে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যা অনুপাতে বন্টন করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক সশস্ত্র সংঘাত, হত্যা, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। ষড়যন্ত্রমূলক এবং একটি বিশেষ শ্রেণী গোষ্ঠীর পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারি খাস ভূমি দখল এবং বনজ সম্পদ ধ্বংসের পাঁয়তারার অংশ হিসেবে চালু করা ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) বা পাড়াবন প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক সশস্ত্র সংঘাত, হত্যা, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।
উপজাতিরা সমগ্র বাংলাদেশে জমি ক্রয়, বসবাস, চাকরি ও ব্যবসা করতে পারে। একই ভাবে তিন পার্বত্য জেলায় অন্য ৬১ জেলার নাগরিকদের সীমিত আকারে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প কারখানা স্থাপন কিংবা ব্যবসায়ীক বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করে বসবাস করার সুযোগ দিতে হবে। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রী প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, সকল সরকারি চাকরি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, উপবৃত্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে বৈষম্য মূলক উপজাতি কোটার পরিবর্তে জনসংখ্যার অনুপাতে অনগ্রসর কোটা চালু করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিদের জন্য সমহারে কোটা নির্ধারণ করতে হবে।

দারুল আরকাম প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত জাতি গঠনে কাজ করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ——বোরহান উদ্দিন উন্নয়নমূখী পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে হলে প্রশিক্ষণের প্রকৃত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে —-এ কে এম মকছুদ আহমেদ প্রশিক্ষণের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আপনারা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন ——মুহাম্মদ ইকবাল বাহার চৌধুরী

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930