
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকালই আগামী চার বছরের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকালই আগামী চার বছরের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার সীমা সম্প্রসারণ, লাখ লাখ অভিবাসীর প্রত্যাবাসন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের পর ক্ষমতায় ফিরেছেন ট্রাম্প। এবারের মেয়াদে পররাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তার প্রথম মেয়াদের নীতিগুলোকেই বহাল রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে এশিয়া-প্যাসিফিকে চীনকে মোকাবেলায় পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের প্রতি আগের মতোই বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী গতকাল দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার কিছুক্ষণ আগে শপথ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন উপস্থিত ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এক নতুন সুবর্ণ যুগের সূচনা হয়েছে। এখন থেকে আরো উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। সারা বিশ্বে আবার সম্মান অর্জন করবে। আমাদের দেখে বিশ্বের সব দেশের ঈর্ষা হবে। মার্কিনদের ব্যবহার করে সুবিধা নেয়ার সুযোগ আর কাউকে দেয়া হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সর্বশেষ নির্বাচনে মার্কিন নাগরিকরা এখানে ঘটে যাওয়া প্রতারণার ঘটনাগুলোকে পুরোপুরি বদলে দিতে আমাকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। একই সঙ্গে জনগণের আস্থা, সম্পদ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার রায়ও দিয়েছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের অধঃপতনের এখানেই সমাপ্তি।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বড় একটি অংশ ইন্দোপ্যাসিফিকে চীনকে মোকাবেলায় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পক্ষে। তাদের মধ্যে নতুন প্রশাসনের জাতীয৪ নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয৪াল্টজ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর তুলসি গ্যাবার্ড ও এফবিআই প্রধান কাশ প্যাটেলের নাম বিশেষভাবে উলে৪খযোগ্য। তাদের কেউ কেউ আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূতও।
বিশে৪ষকরা বলছেন, ভারতের সঙ্গে ভূরাজনীতি, নিরাপত্তা, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন তার প্রথম মেয়াদের অবস্থানকেই অনুসরণ করবে। ইন্দোপ্যাসিফিকে চীনকে মোকাবেলায় পুরনো মিত্র জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি ভারতকে সঙ্গে নিয়ে গঠিত প্রায়বিস্মৃত জোট কোয়াডকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় ভারতের সঙ্গেও চীনের বৈরিতা বেশ ব্যাপক আকার ধারণ করে। একাধিকবার যুদ্ধ পরিস্থিতির কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ভারত ও চীন।
প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালীন ট্রাম্প চীনের সঙ্গে একপ্রকার বাণিজ্যযুদ্ধে নেমেছিলেন। এবারো চীনা পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কর আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভশীলতা হ্রাসের বিষয়টি ভারতের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।