॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছের উৎপাদন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য সেক্টরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করছে। এর ফলে দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে বিদেশেও মাছ রপ্তানি হচ্ছে। এতে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মৎস্য চাষীদের ভাগ্য উন্নয়নে ক্রীক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। অনেকে এই প্রকল্প নিয়ে হেলাফেলা করেছিল আবার অনেকেই সফলও হয়েছিল। মাছ মারা বন্ধ থাকাকালীন মা মাছ নিধন না করে আগামীতে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদনে জেলেদের আরো আন্তরিক হবারও পরামর্শ দেন তিনি। সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধ্বস ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় মাছ মারা বন্ধ থাকাকালীনও সময়মতো জেলেদের ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়নাই। তবে তা শীঘ্রই বিতরণ করা হবে বলেও তিনি জেলেদের আশ^স্থ করেন।
বুধবার (১৯জুলাই) সকালে রাঙ্গামাটিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
“মাছ চাষে গড়বো দেশ বদলে দেব বাংলাদেশ” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে মৎস্য সপ্তাহ-উপলক্ষে সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা মৎস্য দপ্তর সকালে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি র্যালী বের করে। র্যালীটি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে রাজবাড়ী জলযান ঘাটে গিয়ে শেষ হয়। পরে অতিথিরা কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্ত করেন। র্যালীতে কাপ্তাই হ্্রদের জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন রাঙ্গামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আসাদুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য ও মৎস্য বিভাগের আহ্বায়ক সাধন মনি চাকমা উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল রহমান।
আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, কাপ্তাই হ্্রদ আজ চরম হুমকির মুখে। ক্রমাগত পলি জমে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য চাষ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে উঠেছে। এ হুমকি মোকাবেলায় দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি সরকারকে কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি জেলেদের উদেশ্যে বলেন, কাপ্তাই হ্রদের মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমে ডিমওয়ালা মাছ শিকার করা হলে তা আপনাদের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতি হবে। বর্তমানে জেলায় নিবন্ধিত ২১১৫৯জন জেলে রয়েছে আগামীতে আরো বাড়বে। হ্রদে যদি মাছ উৎপাদন না বাড়ে আগামিতে জেলেরা খাবে কি। তাই এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে। তিনি কাপ্তাই হ্রদে জাক দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করতে মৎস্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি পরামর্শ দেন। মাছ চাষকে আন্তরিকতা আর পরিশ্রম দিয়ে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।