রাঙ্গামাটিতে ভারী বর্ষণ,আবারো পাহাড় ধ্বসের আতংকে ভুগছে মানুষ, রাজস্থলীতে ১ জনের মৃত্যু,রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ

॥ নন্দন দেবনাথ ॥ গত দুই দিন ধরে রাঙ্গামাটি জেলায় ভারী বর্ষণের ফলে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। আবারো নতুন করে পাহাড় ধ্বসের অজানা আতংকে ভুগছে রাঙ্গামাটির হাজারো মানুষ। ভারী বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক আবারো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গতকাল সকাল থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার নদীতে পরে এক মারমা যুবকের মৃত্যু ঘটেছে। নিহত যুবকের নাম হ্লাথোয়াই মারমা।
গত ১৩ জুন পাহাড় ধ্বসের ঘটনার পর আবহাওয়ার অবস্থা ভালো হয়ে উঠায় রাঙ্গামাটির আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ বাস ভবনে ফিরেতে শুরু করে। গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃস্টিপাত হলেও গত ২ দিন ধরে আবারো ভারী বর্ষন শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এদিকে গত কয়েকদিনের বৃস্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি স্বাভাবিক রাখতে স্পিলওয়ের ১৬ গেইট ২ ফুট উচ্চতায় খুলে দিয়ে ৩৬ হাজার কিউসেক পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি শহরের ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ী ঘরে লোকজন চলে গেলেও গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে পাহাড়ের মাটি আবারো নরম হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ী গুলোর পাশ থেকে মাটি সরতে শুরু করেছে। এই নিয়ে ফিরে যাওয়া লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। তারা বলেন, আগে বাড়ীর পাশে আশ্রয় কেন্দ্র ছিলো তাই ধ্রুত আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ীর ভঙ্গাংশ দেখে আসতে পারছি কিন্তু আশ্রয় কেন্দ্র দুরে চলে যাওয়ায় তা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা কি করবো তা বুঝে উঠতে পারছি না।
এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে সড়কের ২ টি পয়েন্টে সংস্কার কাজ করে উদ্বোধন করা হলেও গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ২ দিনের ভারী বর্ষণের ফলে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় এই সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
অপরদিকে কাপ্তাই জল বিদ্যুত কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুর রহমান জানান, গত কয়েক দিনের থেমে থেমে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৬ টি স্পিললওয়ে খুলে পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু গত দুই দিন ভারী বর্ষণের ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানি আরো বেশী বৃদ্ধি পাওয়ায় স্পিলওয়ের ১৬ টি গেইট ২ ফুট উচ্চতায় খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩৬ হাজার কিউসেক পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আজ রবিবার সকাল ৮ টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ছিলো  ১০৫.৩৯ এম,এস,এল। তিনি জানান, কাপ্তাই পাওয়ার হাউজের ৫ টি ইউনিটের মধ্যে ৪ টি ইউনিট চালু রয়েছে। ৪ টি ইউনিটের মধ্যে দিয়ে ২৫ হাজার কিউসেক পানি বের হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ৪ টি ইউনিট দিয়ে ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
এদিকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বৃষ্টিপাতের সাথে সাথে আমরা প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে দিয়েছি যাতে করে ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যায়। তিনি বলেন, আমরা যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031