
॥ গিরিদর্পণ ডেস্ক ॥ প্রবল বর্ষণের মধ্যে বান্দরবান-রুমা সড়কের বাগান পাড়ায় গাড়ির উপর পাহাড় ধ্বসে পড়ে ১১জন যাত্রী আহত ও সড়কে পাহাড় ধ্বসে পড়ে নিহত এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন চারজন। এছাড়া চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আহতরা হল, সিংমেচিং (১৭), মুন্নি বড়–য়া (৩৫) সহ ৪জন।
রোববার (২৩জুলাই) দলিয়ানপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরিফুল হক জানিয়েছেন। নিহত নারীর নাম সিংমেহ্লা মারমা (১৮)। তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজরা হলেন, রুমা উপজেলায় কমর্রত স্বাস্থ্যকর্মী মুন্নি বড়ুয়া (৩০), পোস্ট মাস্টার রবিউল (৫০), রুমায় কমর্রত কৃষি ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার গৌতম নন্দী এবং মেসিং মারমা (১৫)।
উদ্ধার চারজনের মধ্যে তিনজন হলেন, একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী অংথোয়াই মারমা (২৬), রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন (৪৮) ও মিনঝিড়ি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা (৪৮)। একজনের নাম জানা যায়নি।
এদিকে রুমা উপজেলার ওয়াই জংশনের পার্শ্ববর্তী বাগান পাড়ার এলাকায় এই দূর্ঘটনার খবর পেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় বান্দরবান জেলা প্রশাসক বান্দরবান জেলা প্রশাসক, বিগ্রেড কমান্ডার ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন।
রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অংথোয়াইচিং মারমা জানান, অংথোয়াই মারমাকে সকালেই বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে অপর দুজনকেও হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জানান।
দুর্ঘটনার পর থেকে বান্দরবান-রুমা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিরী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বলে ইউএনও জানান। তবে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
ইউএনও শরিফুল হক বলেন, বান্দরবান থেকে যাত্রীবাহী একটি বাস রুমা যাওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে দলিয়ানপাড়া এলাকায় পৌঁছলে পাহাড় ধসে পড়ে সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ওই বাসে ১২ জন যাত্রী ছিলেন।
“যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পাহাড় ধসের জায়গাটি হেঁটে পার হচ্ছিলেন। প্রথমে ৪/৫ জন যাত্রী পার হয় যান। কিন্তু পরে আরও নয়জন যাত্রী পার হওয়ার সময় তাদের উপর পাহাড় ধসে পড়ে।”
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে চার জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। এছাড়া সড়কের এক কিলোমিটার নিচ থেকে চিং মেহ্লা মারমা নামে এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবহিনীর প্রকৌশল বিভাগ ১৯ ইসিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইফতেখার ঘটনাস্থল থেকে জানান, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, দমকল বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন ও রেড ক্রিসেন্ট যৌথভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। সন্ধ্যা নামায় এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। নিখোঁজ চারজনের উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।