ঢাবি হলে সিট দখলে বাধা পেয়ে ছাত্রলীগের ভাংচুর

সিট দখলে বাধা দেওয়ায় একটি বার্তা সংস্থার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে তারা মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফকির রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদারের অনুসারীরা রাত ১২টার পর পদ্মা ব্লকের বিভিন্ন কক্ষে জোর করে নিজেদের কর্মীদের তুলতে চাইলে বাধার মুখে পড়েন।

শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করেন এক আবাসিক ছাত্র।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন,“হঠাৎ করে ছাত্রলীগ বিভিন্ন রুমে নিজেদের কর্মী তুলতে চাইছিল। এর মধ্যে আমাদের রুমেও আসে। আমরা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ রেখে স্যারদের ফোনে খবর দিই। কিন্তু তারা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে খুলতে বাধ্য হই।”

খবর পেয়ে শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে এসে সিট দখলে বাধা দিলে ছাত্রলীগ কর্মীরা হল প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটরদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ‍শুরু করে। এক পর্যায়ে রাত সোয়া ১টার দিকে তারা হল প্রাধ্যক্ষের অফিসের কাচ ভাংচুর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান।

পরে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান এসে পরিস্থিত শান্ত করেন।

আবিদ আল হাসান বিভিন্ন কক্ষে জোর করে তোলা কর্মীদের সরিয়ে নিতে বললে হল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের ফিরিয়ে নেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

প্রাধ্যক্ষ শফিউল আলম ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা ধাওয়া ও ভাংচুরের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, “এটি হলের ভেতরের ঘটনা। হল কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি করবে এবং নিয়ম অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেবে।”

প্রাধ্যক্ষের কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় ‘ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে’ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ বিজয় একাত্তর হল শাখার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে নেতাকর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার পর গভীর রাতে ইউএনবির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইমরান হোসেনকে হলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইমরান বিজয় একাত্তর হলের পদ্মা ব্লকের ৫০০৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। ওই ব্লকে সিট দখলের চেষ্টার সময় তিনি ছাত্রলীগ কর্মীদের বাধা দিয়েছিলেন বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভাষ্য।

ওই ব্লকের এক আবাসিক ছাত্র জানান, হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন হওলাদারের অনুসারীরা ৫০০৩ নম্বর কক্ষে গেলে ইমরানের সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়।

“এ সময় ইমরানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রাতে প্রাধ্যক্ষ অফিস থেকে বের হয়ে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান হলের কর্মীদের সঙ্গে ইমরানের বিষয়টি মিটমাট করে দেন।”

এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে ইমরান নিজের কক্ষে যাওয়ায় সময় নয়নের অনুসারী ১০-১২ জন তাকে মারধর করে বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

তিনি বলে, ইমরানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031