ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ

ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে ইলেকট্রনিক বা ই-পাসপোর্ট। বহির্বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশেও চালু করা হচ্ছে এই পাসপোর্ট। ই- পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় ঘরে বসেই ইন্টারনেটে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে অল্প সময়ে পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট। ই- পাসপোর্টের মাধ্যমে শেষ হতে চলেছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অর্থাৎ এম আর পি পাসপোর্টের যুগ।

উন্নত প্রযুক্তির ই-পাসপোর্টের জন্য ডেমোগ্রাফিক তথ্য, দশ আঙুলের ছাপ, চোখের কর্নিয়ার ছবি এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে। এজন্য স্থাপন করা হবে একটি কেন্দ্রীয় ডেটা সেন্টার। আবেদনকারীদের পাসপোর্ট একটি বিশেষ সেন্টার থেকে প্রিন্টিংয়ের পর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এবং দূতাবাসগুলোতে পাঠানো হবে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও দূতাবাস থেকে আবেদনকারীরা সহজে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। জার্মান প্রতিষ্ঠান ভেরিডস গ্যাব এইছ বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট তৈরিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।

এই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই বিষযটি উত্থাপন করা হয়েছে। একনেকে অনুমোদন পেলে মন্ত্রণালয়ের অধীন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর আগামী মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু করবে বলে জানা যায়। ই-পাসপোর্ট চালু করতে চার হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২৮ সালের মধ্যে যাতে ই- পাসপোর্ট সেবা চালু করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করা হবে। তবে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ই-পাসপোর্ট বিতরণ করা সম্ভব হবে। ই-পাসপোর্ট চালু হলে বিশ্বে বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে সরাসরি জি টু জি (সরকার টু সরকার) পদ্ধতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সম্প্রতি অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকার তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে ২০ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট আমদানি করা হবে এবং দুই কোটি ৮০ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট দেশে উৎপাদন করা হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে ই-পাসপোর্ট বিতরণ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যেমন : সার্ভার, রাউটার, সুইচ, কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ক্যামেরা, ই-পাসপোর্ট রিডার, প্রিন্টিং মেশিন স্থাপন করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়।

ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এম আর পি ডেটাবেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে ৫ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এম আর পি পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে না। তবে কারও পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাকে এম আর পির বদলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে।

 

বর্তমানে বই আকারে যে পাসপোর্ট আছে, ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে বর্তমানে পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডের মধ্যে থাকবে একটি চিপ। সেই চিপে পাসপোর্টের বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, ই-পাসপোর্ট চালুর জন্য দেশের প্রতিটি বিমান ও স্থলবন্দরে চাহিদা মোতাবেক ই-গেট স্থাপন করে স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা হবে। যাদের হাতে ই-পাসপোর্ট থাকবে, তাদের এই গেট দিয়ে সীমান্ত পার হতে হবে। তবে যাদের হাতে এম আর পি পাসপোর্ট থাকবে, তাদের ইমিগ্রেশনের কাজ বিদ্যমান পদ্ধতিতে চলমান থাকবে।

দেশের জনগণের পাসপোর্টের নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করার জন্য ই-পাসপোর্টের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। সরকারের একনেকে প্রকল্পের অধীনে দ্রুত বাস্তবায়িত করা হবে ই-পাসপোর্টের কাজ। শুধু তাই নয় জনগণ ঘরে বসে আবেদন করতে পারবে এবং দ্রুত সময়ের ভিতর পাসপোর্ট পৌঁছে যাবে জনগণের হাতে।

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে র‌্যালি ও দোয়া জুলাই এর গণঅভূত্থানে ছাত্র জনতার রক্তদান এবং অসংখ্যজনের পঙ্গুত্ব বরণের মধ্যদিয়ে আমরা নতুন দেশ পেলাম —–প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমান

Archive Calendar
MonTueWedThuFriSatSun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031