বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষও আধুনিক সব ধরনের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা গ্রহণ করছেন। দেশে দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের চাহিদা শেষ হবে আগামী বছর। তাই ইন্টারনেট ডেটার চাহিদার কথা চিন্তা করে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। তবে কনসোর্টিয়াম মডেল ছাড়াই এ ক্যাবল স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে থ্রিজি সেবার পর ফোরজি সেবা চালু এবং ব্রডব্যান্ড কানেকটিভিটির সংখ্যা বৃদ্ধি, অনলাইনে আর্থিক লেনদেন, কেনাকাটা থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের কাজ এখন ইন্টারনেটনির্ভর। তাই তৃতীয় সাবমেরিন কেবল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করা হচ্ছে। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের রুট হবে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর।
এ ক্যাবল থেকে প্রায় ৮ হাজার জিবিপিএস (৮ টেরাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে নতুন সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশন চট্টগ্রামে স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডাক, টেলিযোগযোগ বিভাগের অধীনস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডেটার ব্যবহার প্রতিদিনই বাড়ছে। সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যান্ডউইডথের চাহিদা শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এটি কীভাবে করা হবে তার প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। সরকারি নিয়মে প্রকল্প তৈরি করে পেশ করতে হয়, তার জন্য কাজ চলছে।
তিনি আরও জানান, দেশে ব্যান্ডউইডথের চাহিদা এখন অনেক বেড়ে গেছে। গত বছরের শেষের দিকে যেখান প্রায় ৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার হতো, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২০ জিবিপিএসে। এখন এমন হয়েছে আন্তর্জাতিক অংশে দেওয়ার জন্য যে ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ ছিল, সেটিও দেশে ব্যবহার করতে হবে বলে মনে হচ্ছে। দেশে যে ক্যাপাসিটি রয়েছে তা আগামী বছর শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল এখন অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো সাবমেরিন ক্যাবল আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামে ‘সি-মি-উই-৪’ এ যুক্ত হয়। এখন প্রায় ৩৫০ জিবিপিএস (৩৫০ গিগাবিট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ পাওয়া যাচ্ছে এর মাধ্যমে। আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সি-মি-উই-৫ চালু হয় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে