বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন(চসিক) এলাকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত প্রতিরোধ ও মোকাবেলা কমিটির প্রথম সভা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। চসিক মেয়র আলহাজ¦ আ.জ.ম.নাছির উদ্দীনকে সভাপতি ও চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সেলিম আকতার চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি গঠন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ১৫ই মার্চ ২০২০ তারিখে এ কমিটি গঠিত হয়। কমিটির অন্যান্যরা হলেন, পরিচালক,মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,জেলা প্রশাসক এর প্রতিনিধি,বিভাগীয় পরিচালক(স্বাস্থ্য)/সিভিল সার্জন, তত্বাবধায়ক চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, পরিচালক,মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা,বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা,পরিচালক,বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়,পরিচালক,পরিবার পরিকল্পনা রয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র আলহাজ¦ আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক(স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম এর সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, বিআইটিআইডি এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা,সচিব মোহাম্মদ আবু শাহেদ চৌধুরী, এডিসি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম অঞ্চল এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. গাজী গোলাম মাওলা, উপ পরিচালক মো. সুলতান মিয়া, সমাজ সেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম এর পরিচালক নুসরাত সুলতানা, পরিবার পরিকল্পনা পরিচালকের পক্ষে আমির হোসেন, অধ্যাপক মেডিসিন ডা. মো. আবদুস সাত্তার, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভায় সঞ্চলনায় ছিলেন কমিটির সদস্য সচিব, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সেলিম আকতার চৌধুরী । সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, চসিকের উদ্যোগে গঠিত ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটির সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহবায়ক এবং সংশ্লিষ্ঠ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই কমিটি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। সর্দি,কাশি ও গায়ের জ¦র হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে এসব রোগীদের মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে (কখন আসছেন, কোথায় ছিলেন) তাদের ইতিহাস লিখে নন-ক্রিটিক্যাল হলে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো এবং তাদের ঠিকানা ও মোবাইল নম্মর সংরক্ষণ রাখা হবে। এদত বিষয়ে ওয়াডের্র মেডিকেল অফিসার কমিটির সদস্য সচিবকে অবহিত করবেন। ক্রাইসিস করোনার ভাইরাসে আক্রান্ত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম প্রস্তুত রয়েছে। এলক্ষে ফৌজদারহাট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,জেনারেল হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতাল এবং প্রয়োজনে বন্দর হাসপাতালকে নির্ধারণ করেছে আজকের এ সভা। এই লক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য আলাদা আলাদা রুম রাখা হয়েছে। সিটি মেয়র তার বক্তব্যে বলেন নগরীর ৪টি হাসপাতালে করোনা ভাইরাস রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হবে। নগরবাসিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ সিটি মেয়রের। তিনি সরকারী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন যারা বিদেশ ফেরত তারা যেন ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকে। চীনের উহানে যখন করোনা ভাইরাস দেখা যায়,তখনি চসিকের উদ্যোগে নগরবাসিকে সচেতন করে তুলতে পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি,লিফলেট বিতরণ শুরু করা হয়। এদত বিষয়ে পূণ:রায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার এবং নগরবাসির মধ্যে লিফলেট করা হবে। এমনকি করোনা ভাইরাাস রোগীর জন্য নগরের চারটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে । এগুলোর মধ্যে ১০০শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও ৫০ শষ্যার ফৌজদারহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং রেলওয়ে হাসপাতাল রয়েছে । প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বন্দও হাসপাতাল ও ব্যবহার করা যাবে। সিটি মেয়র কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে উপস্থিত সদস্যদেরকে অবহিত করেন।কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে,করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন,সচেতনতা সৃষ্টি,প্রয়োজনে কোয়ারেনটাইসহ প্রয়োজনীয় আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া ,করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ জাতীয় কমিটির পরামর্শ গ্রহন করা।
এসময় চট্টগ্রাম বিভাগ পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইরত অবস্থায় ৯১জন আছে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ৫শ’৬৭ জন আসছে। এরমধ্যে ১শ’ ৫৬জন ওমরা হজ্ব থেকে আসছে। তাদেরকে দীর্ঘসময় রেখে পারসন টু পারসন হিসট্রি নিয়েছি। তাদের মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানা নিয়েছি। খুব সতর্কতার সঙ্গে হোম আইসোলেশনে পাঠিয়েছি। যারা হোম আইসোলেশনে যাচ্ছে তারা দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ শহরে থাকছে আবার কেউ গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছে। যারা গ্রামে যাচ্ছে তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ এবং চেয়ারম্যানদেরকে জানানো হচ্ছে। নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও দায়িত্বরত থানাকে জানানো হচ্ছে। বিষয়টি তারা যেন পর্যবেক্ষণ করতে পারে।