মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আনা ২৮ তম মামলার রায় ঘোষণা অপেক্ষমান (সিএভি) রয়েছে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ২৮ তম মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা অপেক্ষমান রেখে গত ৭ মার্চ আদেশ দেয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটি হবে ২৮ তম মামলার রায়। এ মামলায় আসামীরা হচ্ছেন কিশোরগঞ্জে রাজাকার সৈয়দ মো. হুসাইন ও মোহাম্মদ মোসলেম প্রধান। গত বছরের ৯ মে এই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে মোহাম্মদ মোসলেম প্রধান গ্রেফতার রয়েছেন।ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল ও আপিল রায়ের রিভিউ’র চুড়ান্ত ছয়টি রায়ের পর জামায়াতের প্রাক্তন আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, প্রাক্তন দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের প্রাক্তন নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আপিলের আরেক রায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা মৃত্যুদন্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ ইতোমধ্যে আবেদন দাখিল করেছে যা এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে আরো ১৬টি মামলা। এসব মামলার আসামিরা হলেন- জামায়াত নেতা আব্দুস সুবহান ও এটিএম আজহারুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার ও সাবেক এমপি পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার, চাপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটু, বাগেরহাটের শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার ও খান আকরাম হোসেন, পটুয়াখালীর ফোরকান মল্লিক, নেত্রকোনার আতাউর রহমান ননী ও ওবায়দুল হক তাহের, কিশোরগঞ্জের এডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ, হবিগঞ্জের মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া ও তার চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক এবং জামায়াত দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য, পরে বিএনপি ও জাপা নেতা সাখাওয়াৎ হোসেন। ১৬ টি আপিলের মধ্যে আব্দুল জব্বারকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া আমৃত্যু কারাদন্ডের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে। আর বাকী ১৫ টি আপিল মামলায় আসামিরা তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া দন্ডের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেছেন। পর্যায়ক্রমে এসব আপিল মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি হবে বলে জানিয়েছেন এটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্র।