রাঙ্গামাটিতে সীমিত পরিসরে খোলা হয়েছে মার্কেট ও দোকানপাট, নেই ক্রেতা

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘদিন ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ থাকার পর অবশেষে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলগুলো সীমতি আকারে ঝুঁকি নিয়ে খোলা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের বিধিনিষেধ এবং আতঙ্কের কারণে প্রথমদিনে ক্রেতা সাধারণ ছিলো খুবই কম এবং বেচাকেনা তেমন ছিলো না।
বুধবার (১৩মে) সকালে শহরের কিছু কিছু এলাকার দোকান, শপিংমলগুলো সীমিত আকারে ঝুঁকি নিয়ে খোলা হলেও বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকাল থেকে রাঙ্গামাটি জেলা শহরের বনরূপা, রিজার্ভ বাজার তবলছড়ি এলাকায় ব্যবসায়ীরা সীমিত আকারে খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে দোকান শোরুমগুলোর মধ্যে জমে যাওয়া ময়লা পরিষ্কার করছেন এবং বিক্রয় পণ্যগুলি সাজিয়ে তোলার চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ক্রেতা না আসায় বেচাকেনা নেই বলে জানান বিক্রেতারা।
বিএম শপিং কমপ্লেক্স এর ব্যবসায়ী প্রগতি সু’র মালিক মোজাম্মেল হক বলেন, করোনায় সরকারী ঘোষনার কারণে অনেকদিন মার্কেট বন্ধ ছিলো। একদিনে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। ব্যবসা না চল্লেও খরচ কিন্তু থেমে থাকেনি। দোকান ভাড়া, স্টাফ বেতন, সংসার খরচ ঋণের কিস্তি ও সুদ চালিয়ে যেতে হয়েছে। পহেলা বৈশাখ ও বৈসাবী’র বেচাকেনাটাও করতে পারিনি। এখন বছরে একটি মাত্র মৌসুম ঈদ সেটাও প্রায় শেষর পথে। দোকানের পণ্যগুলি স্টকলট হয়ে পরবে, হাতে নগদ টাকা প্রায় শেষ। নিরূপায় হয়ে রাঙ্গামাটি ব্যবসায়ী ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের সার্বিক সহায়তা এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে আলোচনা এবং সিদ্ধান্তমতে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলছে।
রাঙ্গামাটি ব্যবসায়ী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল উদ্দীন বলেন, ব্যবসায়ীদেরও জীবনের মায়া আছে। আমরাও সচেতন। রাস্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকার ১০ মে থেকেই দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছিলো। আমরা ১৩ তারিখ থেকে সীমিত পরিসরে খোলার সুযোগ করে দিয়েছি। সরকারের স্বাস্থ্য বিধিগুলি মেনে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা আছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। ফেডারেশন এবং সমিতির নেতারাও এসব স্বাস্থ্য বিধিগগুলি পালনে নির্দেশনা এবং সহযোগীতা করছে। দোকানদানরা অবশ্যই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাপস পরবে। ব্যবহার করবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ক্রেতাদের দোকানে প্রবেশ করার আগে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে। মার্কেটের প্রবেশপথে থাকবে জীবাণুনাশক হাতধোয়া ব্যবস্থার সরঞ্জামাদি।
তিনি বলেন, ক্রেতাদের প্রয়োজন মোটানো ব্যবসায়ীদের কাজ। অনেক ক্রেতা ১০ মে থেকেই ফোনে জানতে চেয়েছে তারা মার্কেটিং করতে আসতে পারবে কিনা। কিছু কিছু ক্রেতারা আজ আসছে। আর প্রথমদিন খুলে পরিষ্কার-পরিছন্ন এবং দোকানের মালামাল সাজানোর চেষ্টায় দিন অতিবাহিত করে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরও বলেন, মার্কেট খোলা হলেও ক্রেতা কম। একদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক এবং অন্যদিকে শহরে যানচলাচল বন্ধ, সব মিলে এই বছর যেমন ক্রেতার দেখা পাওয়া কষ্টকর হবে তেমনি ব্যবসা কাটবে মন্দায়।
ক্রেতা নাসরিন সুলতানা বলেন, করোনার কারণে একটু আতঙ্কে আছি। তবুও পারিবারের প্রয়োজনে কিছু জরুরী কেনাকাটা করতে কয়েকটি মার্কেট ঘুরেছি। নিজের পরিবারের জন্য জামা-কাপড় দেখলাম। পছন্দ হয়নি এখনো। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাবো।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারের নির্দেশনা মেনে দোকান-পাট খুলবে। সকাল ১০টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪টার মধ্যে দোকান বন্ধ করবে। এছাড়া করোনা প্রতিরোধে ব্যবসায়ীদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা সেই নির্দেশনা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করবে।

Archive Calendar
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031